সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়
মাইক্রোবায়োলজি, বায়োটেকনোলজি, এবং নিউট্রিশন, ইত্যাদি বিষয় পড়ে কেরিয়ার তৈরির বহু সুযোগ রয়েছে। সেই বিষয়েই এবার কথা বললেন সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়।
বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে মাইক্রোবায়োলজির চাহিদা অত্যন্ত বেড়েছে। মাইক্রোবায়োলজির মধ্যে বিভিন্ন ডোমেইন রয়েছে। যেমন আণবিক জীববিজ্ঞান, জেনেটিক্স, ইমিউনোলজি ইত্যাদি। এই অধিক্রমণ ফলে মাইক্রোবায়োলজির ভবিষ্যত সুযোগের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে। যে পরিধির মধ্যে রয়েছে ফার্মাসি, মেডিসিন, ক্লিনিকাল রিসার্চ, কৃষি, দুগ্ধজাত পণ্য, ন্যানোটেকনোলজি এবং কেমিক্যাল টেকনোলজির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র। যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠে তাদের মাইক্রোবায়োলজিস্ট বলে। তারা অণুজীব এবং সংক্রামক এজেন্ট নিয়ে গবেষণা করে, যেগুলিকে খালি চোখে দেখা যায় না। এই সমস্ত বিজ্ঞানী বা গবেষকরা নিশ্চিত করেন যে অন্যান্য জীবের সঙ্গে অণুজীবের মিথস্ক্রিয়া মানুষের জীবনে কোনও ক্ষতি করে না। যখনই কোনও মাইক্রোবস বা জীবাণুর বিকাশ মানুষের জীবনে ক্ষতি বা সংক্রামিত করার সম্ভাবনা তৈরি করে, তখনই এই সমস্ত বিজ্ঞানীরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ভারত এবং ভারতের বাইরে, সর্বক্ষেত্রেই মাইক্রোবায়োলজিতে কেরিয়ার তৈরির উজ্জ্বল ভবিষ্যত রয়েছে। হাসপাতাল, ক্লিনিকাল ল্যবরেটরি তো রয়েছেই, তার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফার্মাসিউটিক্যাল-বায়োটেক সংস্থা, পরিবেশ সংস্থা, খাদ্য শিল্প, পানীয় শিল্প, রাসায়নিক শিল্প, কৃষি বিভাগ এবং সরকারি স্তরে বিভিন্ন ধরনের প্লেসমেন্টের সুযোগ রয়েছে।
রেজিস্ট্রেশন করতে এখনই ক্লিক করুন
বায়োটেকনোলজি - নামের মধ্যেই বিষয় সম্পর্কে বিশদে বলা রয়েছে। বায়ো তথা জীববিজ্ঞান এবং টেকনোলজি তথা প্রযুক্তি। অর্থাৎ প্রযুক্তির সঙ্গে জীববিজ্ঞানের সংমিশ্রণ। এটি জীবিত প্রাণীসত্ত্বাকে ব্যবহার করে এমন পণ্য বা সংশোধিত প্রাণীসত্ত্বাকে তৈরি করে, যা মানবজাতির জন্য উপকারী। এই প্রযুক্তি কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে উপযুক্ত পণ্য উৎপাদনের জন্য জীবের জৈবিক পদ্ধতির ব্যবহার করে। বর্তমানে বায়োটেকনোলজির ধারণাটি ইমিউনোলজি, ভাইরোলজি, স্বাস্থ্য, কৃষি, কোষ জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদ শারীরবৃত্তিও প্রক্রিয়া, বীজ প্রযুক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিস্তৃত হয়েছে যা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইকোলজি, টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি, কসমেটিকস এবং ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলির মতো বিভিন্ন শাখার দরজা খুলে দিয়েছে। যেখানে বায়োটেকনোলজির একজন শিক্ষার্থী কাজ করতে পারে।
নিউট্রিশন অর্থাৎ পুষ্টি এমন একটি বিষয় যেটি ডায়েটিক্সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলে। যখন রোগী অথবা ক্লায়েন্টদের এই ধরনের বিশেষ পরিষেবার প্রয়োজন হয়, তখন এই বিষয়ে বিশেষ জ্ঞানের প্রয়োজন হয়। এই বিষয় নিয়ে ভবিষ্যত কেরিয়ারের পথও বেশ উজ্জ্বল। কারণ বিভিন্ন ক্লায়েন্ট বা নামী-দামী ব্যক্তিরা তাদের শরীর ফিট রাখার জন্য নিজস্ব ডায়েটেশিয়ান রাখেন। সার্টিফাইড নিউট্রিশন স্পেশালিস্ট, ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান, ডায়েটেক টেকনিশিয়ান, হেলথ কোচ, স্পোর্টস নিউট্রিশানিস্ট, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে কেরিয়ার তৈরি করতে পারে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও খাদ্য উৎপাদন শিল্প এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মতো কর্পোরেট সেক্টরেও চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অতএব মাইক্রোবায়োলজি, বায়োটেকনোলজি, এবং নিউট্রিশন নিয়ে পড়াশুনা করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেরিয়ার তৈরির সুযোগ রয়েছে। এবং সব থেকে আকর্ষণীয় বিষয় হল, এই ডোমেইনগুলি অন্যান্য এমন ডোমেইনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে যা চাকরি কিংবা গবেষণাভিত্তিক কেরিয়ারের ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা তৈরি করে।