ফাইল চিত্র
দিল্লির নিজ়ামুদ্দিন মার্কাজ় সংক্রান্ত মামলা অত্যন্ত গুরুতর ও তার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জড়িত বলে দিল্লি হাই কোর্টে জানাল কেন্দ্র। তাই তদন্তের স্বার্থে ওই সম্পত্তি ‘সংরক্ষণ’ করা উচিত বলে জানিয়েছে তারা। ওই মার্কাজ় আর কত দিন বন্ধ রাখা হবে তা গত কাল জানতে চেয়েছিল হাই কোর্ট।
২০২০ সালে করোনা অতিমারির মধ্যেই দিল্লির নিজ়ামুদ্দিন মার্কাজ় চত্বরে তবলিগি জামাতের জমায়েত হয়। সেখানে কোভিড বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। তার জেরে বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিদেশিরাও রয়েছেন। সে সব মামলা এখনও বিচারাধীন। তার পর থেকে মামলা সংক্রান্ত সম্পত্তি হিসেবে বন্ধই ছিল মার্কাজ়। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেখানে প্রতি দিন ৫০ জনকে নমাজ পড়ার অনুমতি দেয় হাই কোর্ট। আদালত জানায়, দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকায় উপাসনা স্থল বন্ধ রাখার নির্দেশ নেই।
সম্প্রতি মার্কাজ় ফের খোলার আর্জি জানিয়েছে দিল্লি ওয়াকফ বোর্ড। গত কাল বিচারপতি মুক্তা গুপ্ত মন্তব্য করেন, ‘‘ওই চত্বর চিরদিনের জন্য বন্ধ রাখা সম্ভব নয়।’’
আজ হলফনামায় নরেন্দ্র মোদী সরকার জানিয়েছে, কোভি্ড বিধি সংক্রান্ত মামলার তদন্তের জন্য মার্কাজ়কে ‘সংরক্ষণ’ করা উচিত। ওই মামলা গুরুতর। মামলাটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জড়িত। কেন্দ্র জানিয়েছে, মার্কাজ়ের পরিচালনা আইন, শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত। উৎসবের জন্য মার্কাজ় খোলার আবেদন করা হলে সরকারি কর্তৃপক্ষ সব সময়েই প্রবেশের বিধি শিথিল করেন।
সেই সঙ্গে কেন্দ্র জানিয়েছে, মার্কাজ় যাঁর নামে ‘লিজ়’ নেওয়া হয়েছে একমাত্র তিনিই তা খোলার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন। ওই চত্বরের আবাসিক অংশের এক বাসিন্দা ইতিমধ্যেই সেই অংশ হস্তান্তর করার আবেদন করেছেন। সেই মামলা হাই কোর্টের অন্য বেঞ্চের বিচারাধীন। তাই কেবল আইনি কারণেই ওয়াকফ বোর্ডের আবেদন বাতিল করা যায়। যাঁর নামে ওই মার্কাজ় লিজ় নেওয়া হয়েছে তাঁর অধিকারকে ডিঙিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ওয়াকফ
বোর্ডের নেই।
কিন্তু বিচারপতি গুপ্ত বলেন, ‘‘কয়েক জনের হাতে ওই সম্পত্তি ছিল। অতিমারির সময়ে এফআইআর হয়েছিল। আপনারা সম্পত্তির দখল নিয়েছিলেন। সেটা ফেরত দিতে হবে। চিরদিনের জন্য সম্পত্তি আপনাদের হাতে রাখা সম্ভব নয়। মামলার বিষয়ে আপনাদের অবস্থান, কত দিন আপনারা ওই সম্পত্তি হাতে রাখতে চান ও কাদের কাছ থেকে সম্পত্তির
দখল নিয়েছিলেন সে কথা আমাকে জানান।’’ মার্কাজ়ের পরিচালন কমিটির এক সদস্য মামলায় পক্ষ হতে চেয়ে আবেদন করেছেন। তাঁর আর্জির ভিত্তিতে এ দিন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গুপ্ত। ওয়াকফ বোর্ডকে কেন্দ্রের হলফনামার জবাব দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ১৬ নভেম্বর ফের শুনানি হবে।