গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীর ত্রিবেণী সঙ্গমে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। পিটিআই
হাতে নারকেল, ফুলে সাজানো পুজোর ডালা। কব্জিতে জড়ানো রুদ্রাক্ষের মালা। পরনে লাল রঙের সালোয়ার-কুর্তা। মুখে ‘হর হর গঙ্গে’ ধ্বনি। মৌনী অমাবস্যার পবিত্র তিথিতে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীর ত্রিবেণী সঙ্গমে ডুব দিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।
বুধবার সাহারানপুরে কিসান মহাপঞ্চায়েত থেকেই কার্যত উত্তরপ্রদেশের ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছিলেন। বৃহস্পতিবার অধুনা নাম বদলে প্রয়াগরাজ হয়ে যাওয়া ইলাহাবাদের সঙ্গমে স্নান করে প্রিয়ঙ্কা সূর্যদেবতার পুজো করলেন। তার পর খালি পায়ে হেঁটে মনকামেশ্বর মন্দিরে গিয়ে মাথায় তিলক লাগিয়ে, ওড়না দিয়ে শঙ্করাচার্য স্বরূপানন্দ সরস্বতীর থেকে আশীর্বাদ নিলেন।
২০২২-এর উত্তরপ্রদেশ ভোটে যোগী আদিত্যনাথ অযোধ্যার রামমন্দিরকে কাজকে সামনে রেখে ময়দানে নামতে চাইছেন। প্রিয়ঙ্কার প্রয়াগরাজের পুজোর পরে প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেস কি ‘নরম হিন্দুত্বে’র অস্ত্রকেও ঝোলায় রাখতে চাইছে?
বুধবারই দেহরাদূন বিমানবন্দর থেকে সাহারানপুর রওনা হওয়ার সময় প্রিয়ঙ্কার হাতে রুদ্রাক্ষের মালা দেখে বিজেপি নেতারা নরম হিন্দুত্বের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছিলেন। আজ প্রিয়ঙ্কার প্রয়াগরাজের কর্মসূচির পরেও সেই একই অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
কংগ্রেস নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, এই রণকৌশলে দোষের কিছু নেই। বস্তুত ২০১৪-র ভোটে কংগ্রেসের হারের কারণ খুঁজতে গিয়ে এ কে অ্যান্টনি কমিটি বলেছিল, হিন্দুদের ক্ষোভও কংগ্রেসের হারের কারণ। তিন বছর পরে রাহুল গাঁধী গুজরাতের ভোটের সময় মন্দিরে গিয়ে নিজেকে পৈতেধারী হিন্দু বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। এ বার উত্তরপ্রদেশেও প্রিয়ঙ্কা গঙ্গার ঢেউয়ে ভর করে কংগ্রেসকে ক্ষমতার তীরে নিয়ে যেতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি ভাবে যদিও কংগ্রেসের দাবি, প্রয়াগরাজে প্রিয়ঙ্কার এই সফরের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রিয়ঙ্কা এ দিন কন্যা মিরায়াকে সঙ্গে নিয়ে নৌকায় করে সঙ্গমে যান। ফেরার পথে নিজে কিছুক্ষণ দাঁড়ও টানেন। নৌকার মাঝি সুজিত নিষাদের পরিবারের খোঁজখবর নেন। কত দিন নৌকা চালাচ্ছেন, জানতে চান। সুজিতের আপত্তি সত্ত্বেও তাঁর হাতে দু’হাজার টাকা গুঁজে দেন। তার আগে নেহরু-গাঁধী পরিবারের পুরনো ঠিকানা আনন্দ ভবনেও যান তিনি। নেহরুকে শ্রদ্ধা জানান, অনাথ আশ্রমের শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান।