আইআরসিটিসি পরিচালিত তেজস এক্সপ্রেসের অন্দরমহল। —ফাইল চিত্র
ট্রেন চালাতে বেসরকারি সংস্থাকে ভার দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাকা করে ফেলেছে মোদী সরকার। এ বার ওই সব সংস্থার হাতে দেওয়া হচ্ছে ভাড়া নির্ধারণ করার ক্ষমতাও। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদব। ফলে টিকিটের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের। যদিও রেলের যুক্তি, নিশ্চয়ই বাতানুকূল বাস এবং বিমানভাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ট্রেনের টিকিটের ভাড়া ঠিক করবে বেসরকারি সংস্থাগুলি।
পরিষেবার উন্নতি, স্টেশনের পরিকাঠামো বৃদ্ধি ও উন্নয়নের মতো বিষয় মাথায় রেখে যাত্রিবাহী দূরপাল্লার ট্রেনের একাংশে বেসরকারি বিনিয়োগের দরজা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। প্রাথমিক ভাবে তালিকায় রয়েছে ১০৯টি রুট। তার জন্য বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে ১৫১টি ট্রেন। সরকারের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি রয়েছে রেলকর্মী, অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের একাংশের। ওই অংশের যুক্তি, বেসরকারি হাতে ট্রেন চালানোর ভার দিলে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও পরিষেবার চেয়ে সংস্থাগুলির বেশি নজর থাকবে মুনাফা বাড়ানোর দিকে।
রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদবের কথাতেও শুক্রবার তেমন আভাস স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থাগুলিকে নিজেদের মতো ভাড়া নির্ধারণের স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে। তবে ওই সব রুটে এসি বাস এবং বিমান ভাড়া কেমন, সেটা বিবেচনা করে তবেই ভাড়া নির্ধারণ করবে সংস্থাগুলি।’’
আরও পড়ুন: কোভিডেও পৌষমাস! ভারতে ৬ মাসে নতুন ১৫ বিলিওনিয়ার
করোনা সংক্রমণের জন্য অধিকাংশ ট্রেন পরিষেবা এখন বন্ধ। চলছে কিছু স্পেশাল ট্রেন। এই অতিমারি পরিস্থিতির পর ট্রেন চালু হলেই বেসরকারি সংস্থার হাতে কিছু দূরপাল্লার ট্রেন চালানোর ভার দেওয়া হতে পারে। বরাত পাওয়ার দৌড়ে রয়েছে অ্যালস্টম এসএ, বোমবার্ডিয়ার আইএনসি, জিএমআর ইনফ্রাস্ট্রাকচার, আদানি এন্টারপ্রাইসের মতো সংস্থা। ভি কে যাদবের বক্তব্য, এই খাতে রেলের প্রস্তাবিত আয় হতে পারে ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: অজানা আইডি থেকে মেল, সরকারি কম্পিউটার হ্যাক, মোদী-ডোভালের তথ্য লোপাট
অন্য দিকে বিমানের মতো রেলেও চালু হতে চলেছে ‘ইউজার ফি’। ব্যস্ততম স্টেশনগুলি থেকে ট্রেন ধরার জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে খুব সামান্য টাকা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘‘খুব সামান্য একটা টাকা আমরা যাত্রীদের কাছ থেকে ইউজার ফি হিসেবে নিতে চলেছি। বিজ্ঞপ্তি জারি হবে খুব শীঘ্রই। স্টেশনের উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণে সেই টাকা খরচ করা হবে।’’ টাকার পরিমাণ খুবই সামান্য হওয়ায় যাত্রীদের তেমন অসুবিধা হবে না বলেই মনে করেন ভি কে যাদব।