নভি মুম্বইয়ের পারসিক হিলের বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ। ছবি: সংগৃহীত।
নিয়মকানুন মানার বালাই নেই। নভি মুম্বইয়ের পারসিক হিলের ঢালের বরাত পেয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। এ জন্য বেসরকারি সংস্থাটিকে দিতে হচ্ছে বছরে মাত্র ১০০ টাকা! বরাত দিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারেরই ‘সিটি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন’ (সিডকো)। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই পরিবেশবিদরা আন্দোলনে নামার কথা ভাবছেন।
পরিবেশবাদীদের সংগঠন ‘নাটকানেক্ট ফাউন্ডেশন’-এর সদস্য বিএন কুমারের দাবি, তথ্য জানার অধিকার আইনে পাওয়া এই সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে সিডকো ২৬,৮৮৮.৭৪ বর্গ মিটার জমি ‘ভূমিরাজ বিল্ডার্স গ্রুপ’ নামে একটি সংস্থাকে দিয়েছে। সেই সংস্থা বেলাপুরের এই পাহাড়ি ঢালের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে। চুক্তিতে বলা রয়েছে, পাহাড়ের ঢালে গর্ত করা বা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা যাবে না। পরিবেশবিদদের দাবি, চুক্তিতে ঢালে ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করার কথা স্পষ্ট লেখা থাকলেও বাস্তবে ওই সংস্থা তা-ই করে যাচ্ছে। যা ওই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। নিত্যই ধস নামার ঘটনাও শোনা যাচ্ছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে মহারাষ্ট্রের লোক আয়ুক্ত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নভি মুম্বই পুরসভাকে নোটিস পাঠিয়েছে।
পরিবেশবিদ বিএন কুমার জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে ‘কম্পট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া’ (ক্যাগ)-এরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বিএন কুমারের অভিযোগ, পাহাড়ের ঢালের রক্ষণাবেক্ষণের বরাত দেওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল টেন্ডার প্রক্রিয়া। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। উল্টে কোনও একটি বেসরকারি সংস্থাকে নামমাত্র মূল্যে সেই দায়িত্ব দেওয়ায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াও অমান্য করা হয়েছে। এহ বাহ্য, পাহাড়ের ঢালে যে সমস্ত গর্ত খোঁড়ার কাজ চলছে, তার কোনও পরিবেশগত ছাড়পত্রও নেই।
এ ভাবে অনিয়ন্ত্রিত খননের ফলে গোটা এলাকাই ধসপ্রবণ হয়ে উঠছে বলে দাবি করেছেন ওই এলাকার বাসিন্দাদের একটি অংশ। শুক্রবার এ বিষয়ে মহারাষ্ট্র মানবাধিকার কমিশনে শুনানি হবে। কোনও প্রক্রিয়া না মেনে কী ভাবে একটি বেসরকারি সংস্থাকে ওই এলাকার রক্ষণাবেক্ষণের ভার দেওয়া হল? চুক্তি লঙ্ঘন করে কী করে ওই এলাকায় ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করছে সেই সংস্থা? নভি মুম্বই পুরসভার অন্তর্গত পারসিক হিলের এই ঘটনায় উঠছে গুরুতর প্রশ্ন।