প্রিজন ভ্যানে বসে কয়েদির ফেসবুক লাইভ উত্তরপ্রদেশে। ছবি: সংগৃহীত।
উত্তরপ্রদেশের মাহোবা জেল থেকে পুলিশি বেষ্টনিতে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বিচারাধীন বন্দি কারতুস যাদব ওরফে লোকেন্দ্রকে। যাত্রাপথে কারতুস মোবাইল বার করে দিব্য ফেসবুক লাইভ করে ফেললেন। এহ বাহ্য, কারতুস ফেসবুক লাইভে আঙুল উঁচিয়ে প্রাণে মারার হুমকি পর্যন্ত দিলেন শত্রুদের! কয়েদির কাছে কোথা থেকে এল মোবাইল? প্রহরারত পুলিশকে পাশে বসিয়ে একজন বিচারাধীন বন্দি কী করে প্রিজন ভ্যানের মধ্যে থেকে সমাজমাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন! প্রশ্নবাণে জেরবার উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২১ অক্টোবর। হামিরপুর জেলার পান্ধারি গ্রামের বাসিন্দা কারতুস। খুনের মামলায় তিনি বর্তমানে মাহোবা জেলে বন্দি। গত ২১ অক্টোবর তাঁকে আদালতে তোলার দিন ছিল। সেই অনুযায়ী, মাহোবা জেল থেকে প্রিজন ভ্যানে চাপিয়ে আর পাঁচ জন কয়েদির মতোই কারতুসকেও হামিরপুর জেলা আদালতে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। পুলিশ লাইন থেকে আসা সেই প্রিজন ভ্যানে কারতুসকে ঘিরে বসেছিলেন এসআই শশাঙ্ক দেব, হেড কনস্টেবল অরবিন্দ আর্য, কোশলেন্দ্র মিশ্র এবং কনস্টেবল কমলেশ কুমার। গাড়ি জেল থেকে আদালতের পথে যাত্রা শুরু করতেই খেল দেখান কারতুস। নিজের মোবাইল বার করে প্রিজন ভ্যানে বসেই ফেসবুক লাইভ শুরু করেন তিনি। আঙুল উঁচিয়ে নিজের ‘শত্রু’দের প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন কারতুস। হুমকি দিতে দিতে ক্রমশই উত্তেজিত হয়ে পড়েন কারতুস। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই পুলিশমহলে তোলপাড় পড়ে যায়। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে থাকে উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে।
এই ঘটনা নজরে আসতেই সুনামি বয়ে যায় পুলিশমহলে। পুলিশ সুপার তড়িঘড়ি সাসপেন্ড করেন এসআই শশাঙ্ক-সহ ওই সময় কারতুসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই হেড কনস্টেবল এবং এক কনস্টেবলকে। কয়েদি কারতুসের বিরুদ্ধেও দণ্ডবিধির ৫০৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। যদিও গোটা ঘটনায় হাত ধুয়ে ফেলেছেন মাহোবা জেলের সুপার শিবমূরত সিংহ। তাঁর দাবি, এ বিষয়ে তাঁর কিছুই করার নেই। কারণ, জেলারের দায়িত্ব জেলের অভ্যন্তরে কয়েদিদের সামলানোর। কিন্তু ঘটনাটি ঘটেছে জেল থেকে আদালতে যাওয়ার পথে। যেখানে কয়েদির নিরাপত্তার দায়ভার জেল কর্তৃপক্ষ সামলান না। যদিও প্রশ্ন উঠছে, কোন জাদুতে প্রিজন ভ্যানের মধ্যে নিজের মোবাইলের নাগাল পেলেন কয়েদি? কারতুস যখন ফেসবুক লাইভ করছেন তখন সেখানে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা কী করছিলেন, তা আরও বড় প্রশ্ন হয়ে উঠে এসেছে। সব মিলিয়ে কারতুসের কারসাজিতে চরম বেকায়দায় দেশের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের পুলিশ ব্যবস্থাই।