ফাইল চিত্র।
করোনা টিকাকরণে গত রবিবার দু’শো কোটি ডোজের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়েছে ভারত। প্রায় দেড় বছরের মধ্যে দেশের মানুষকে কোভিড টিকার দু’শো কোটি ডোজ় দেওয়ার জন্য আজ টিকাকরণে অংশগ্রহণকারী সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁদের উদ্দেশে চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গত বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশে টিকাকরণ শুরু হয়েছিল। আর এ বছরের ১৭ জুলাই তা দু’শো কোটি ডোজ় প্রদানের গণ্ডি পার করল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই দেশের ৯৮ শতাংশ মানুষ টিকার প্রথম ডোজ় নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ় নিয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ। বর্তমানে দেশে চালু রয়েছে বুস্টার ডোজ়।
ভারতের মতো দেশে টিকার প্রায় দু’শো কোটি ডোজ় মসৃণ ভাবে দেওয়ার জন্য আজ স্বাস্থ্য ও টিকাকর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করে তাঁদের জনে-জনে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘যে দিন টিকা দান দু’শো কোটি ডোজ়ে পৌঁছল, সে দিনটি দেশের জন্য স্মরণীয়। দু’শো কোটি ডোজ় দেওয়া কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি অসামান্য সাফল্য’।
প্রধানমন্ত্রী চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘১০০ বছরের ইতিহাসে আসা এ ধরনের অতিমারিতে মানুষের প্রাণ বাঁচানো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের টিকাকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা কর্মী, ফ্রন্টলাইন কর্মীরা ভারতীয়দের জীবনরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যখন দেশের প্রয়োজন ঠিক সেই সময়ে দেশের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যপালনে ঝাঁপিয়ে পড়ে সুচারু ভাবে দায়িত্ব সুসম্পন্ন করার ক্ষেত্রে এ হল একটি প্রশংসনীয় উদাহরণ’।
ভারতের মতো বিশাল দেশে ১০০ কোটির বেশি মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার কাজটি মোটেই সহজ ছিল না বলে মেনে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও। তিনি উল্লেখ করেছেন, শীতল পাহাড়ি এলাকা থেকে মরুভূমির প্রবল গরম, দূরপ্রান্তের গ্রাম কিংবা ঘন জঙ্গল— সর্বত্র পৌঁছে গিয়েছেন টিকাকর্মীরা। তাঁদের লক্ষ্যই ছিল যাতে এক জনও বাদ না পড়েন এবং তাঁরা প্রমাণ করেছেন দেশের শেষ প্রান্তেও পরিষেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে নতুন ভারত। যে গতিতে ওই বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে, তা চমকপ্রদ এবং তা কেবল সম্ভব হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যই।
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন যে স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া কোনও ভাবেই ওই টিকাকরণ অভিযান সফল হওয়া সম্ভব ছিল না। তাঁর মতে, প্রতিষেধকের দু’শো কোটি ডোজ়ের লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব হয়েছে দেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আন্তরিকতা, দেশবসীর কাজের প্রতি নিষ্ঠার কারণেই। যা সাফল্য হিসাবে মানতে বাধ্য হয়েছে গোটা পৃথিবী।
দেশ জুড়ে প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ডোজ় প্রদানের পাশাপাশি, এখন শুরু হয়েছে বুস্টার ডোজ় দেওয়া। যদি বুস্টার ডোজ় নেওয়ার প্রশ্নে দেশবাসীর একাংশের গা-ছাড়া মনোভাব রয়েছে বলে অভিযোগ। সেই প্রবণতা পাল্টাতে আগামী ১৫ অগস্ট পর্যন্ত দেশ জুড়ে বিনামূল্যে প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচি চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ওই সিদ্ধান্তের পর থেকে বুস্টার ডোজ় নেওয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেড়েছে।