পালাক্কাড়ে প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
বিধানসভা নির্বাচনের (৬ এপ্রিল) ঠিক এক সপ্তাহ আগে প্রচারের থিম যেন ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ বা গোপন বোঝাপড়া! দক্ষিণের উপকূলীয় রাজ্যে আজ প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টেনে এনেছেন শাসক এলডিএফ এবং বিরোধী ইউডিএফ-এর বোঝাপড়ার প্রসঙ্গ। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী তথা এলডিএফ শিবিরের প্রধান পিনারাই বিজয়নও বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের ‘ম্যাচ ফিক্সিং’য়ের তত্ত্ব তুলে ধরে ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন টুইটারে। অন্য দিকে সোনা পাচারের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী কিংবা তাঁর কোনও সতীর্থের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করা হল না, সেই প্রশ্ন তুলে বিজেপি এবং এলডিএফ-কে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা।
সোনা পাচার কাণ্ডের উল্লেখ করে অবশ্য মোদীও সরব হয়েছেন বিজয়ন সরকারের বিরুদ্ধে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখেই মোদী টেনে এনেছেন জুডাসের বিশ্বাসঘাতকতার প্রসঙ্গও। তাঁর কথায়, ‘‘সামান্য কিছু রূপোর জন্য জুডাস যে ভাবে প্রভু যিশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন, একই ভাবে এলডিএফ-ও সোনার জন্য কেরলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’’ মোদীর বক্তব্যের পরেই বিজেপিকে ট্রোল করে নেটিজেনদের একাংশের বক্তব্য, ‘তা হলে কি বাইবেলও পড়েছেন মোদী?’
বিজয়নের অভিযোগ, পাঁচ বছর আগে প্রথম বারের জন্য কেরলে বিজেপির খাতা খোলার নেপথ্যে ছিল কংগ্রেসের সাহায্য। এ বারে অবশ্য এলডিএফ সেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করবে বলে আশাবাদী বিজয়ন। একই সঙ্গে রাজ্যে বিজেপির ভোট শতাংশও কমবে বলেও প্রত্যয়ী বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী।
পালাক্কাডে আজ ‘মেট্রোম্যান’ ই শ্রীধরনের প্রচারসভায় মোদীর বক্তব্যে বারেবারেই উঠে এল ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ প্রসঙ্গ। বলেন, ‘‘এই প্রথম বার কেরলের ভোটদাতারা এলডিএফ এবং ইউডিএফ-এর ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। পাঁচ বছর এক শিবির এবং পরের পাঁচ বছর অন্য শিবির... এ ভাবেই লুট চালাচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের পর্যটনের বিকাশে কিছুই করেনি এলডিএফ।
সোনা পাচারকে কেন্দ্র করে এলডিএফ এবং বিজেপির আঁতাঁতের অভিযোগ তুলে সুরজেওয়াল জানান, বিজয়নের সঙ্গে মোদীর গোপন বোঝাপড়া হয়েছে। তার জেরেই সোনা পাচার নিয়ে রাজ্যে শোরগোল পড়লেও কোনও তদন্তের মুখে পড়তে হল না মুখ্যমন্ত্রী বা তাঁর মন্ত্রিসভার কোনও সদস্যকে।
সুরজেওয়ালার অভিযোগ, বায়ুবিদ্যুৎ এবং সৌরবিদ্যুৎকে কেন্দ্র করেই মোদীর সঙ্গে সমঝোতা করেছেন বিজয়ন। সেই অক্ষের তৃতীয় বিন্দুতে বিজেপি ঘনিষ্ঠ আদানি গ্রুপ। তাঁর অভিযোগ, ইউনিট পিছু ১ টাকা ৯০ পয়সায় যেখানে সৌরবিদ্যুৎ মিলছে সেখানে আরও ১ টাকা বেশি খরচ করে আদানি গ্রুপের সঙ্গে কেন চুক্তি করল কেরল সরকার? ২০১৮-১৯ সালের পরিসংখ্যান তুলে সুরজেওয়ালার কটাক্ষ, রাজ্যে যেখানে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত সেখানে বেশি খরচ করে বিদ্যুৎ কেনার যুক্তি কী? তাঁর প্রশ্ন, এই বিশেষ চুক্তির জন্যেই কি ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতর কোনও পদক্ষেপ করল না মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে?