ফাইল ছবি
কংগ্রেস নয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কাকে বিরোধী জোটের প্রার্থী করা হবে, সেই প্রশ্নে আঞ্চলিক দলের হাতেই নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেসের কোনও নেতার বদলে শরদ পওয়ার বা অন্য কোনও অকংগ্রেসি ব্যক্তিকেই বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। বৃহত্তম বিরোধী দল হলেও কংগ্রেসেরও এখনও পর্যন্ত তাতে আপত্তি নেই। সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহের বুধবার, ১৫ জুন, দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে বিরোধী দলগুলির বৈঠক হতে পারে।
বৃহস্পতিবারই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ফোন করে মমতার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তার পরে শুক্রবার মমতা এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে এনসিপি সূত্রের খবর। বৃহস্পতিবার সনিয়া পওয়ারের সঙ্গেও কথা বলেন। সনিয়া এখন কোভিড আক্রান্ত। কথা বলতে গেলেই কাশি হচ্ছে। সূত্রের খবর, মমতার সঙ্গে কথা বলার সময়ও তিনি প্রবল ভাবে কাশছিলেন। মমতা সনিয়াকে বলেন, তিনি বিশ্রাম নিন। এই অবস্থায় বেশি কথা বলার প্রয়োজন নেই। মমতা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।
সনিয়ার দূত হিসেবে খড়্গে বৃহস্পতিবার রাতেই মুম্বইয়ের পওয়ারের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন। খড়্গে ডিএমকে, তৃণমূল ও শিবসেনার সঙ্গে কথা বলবেন। ইতিমধ্যে মমতা ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন, তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির নেতা কে চন্দ্রশেখর রাও, আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে কথা বলেছেন। আগামী সপ্তাহে বিরোধীদের বৈঠকে না গেলেও, কেজরীবাল বিরোধী জোটের সঙ্গেই থাকবেন বলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন।
আগামী ১৮ জুলাই রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন। ২০১৭-র রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের মীরা কুমারকে বিরোধী জোটের প্রার্থী করা হয়েছিল। এ বার তৃণমূল, আম আদমি পার্টি এক মাস আগেই অবস্থান নিয়ে ফেলেছে, কংগ্রেসের কোনও নেতাকে দাঁড় করানো যাবে না। আনন্দবাজারে সে খবর প্রকাশিতও হয়। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি জানিয়ে দিয়েছে, তাঁরা মমতার সঙ্গে থাকবেন। এখন তৃণমূল, আম আদমি পার্টি, এসপি, টিআরএস ঠিক সেই কথাই বলছে। তাঁদের অবস্থান, কংগ্রেস নিজের কোনও নেতাকে এগিয়ে দিতে চাইলে তা মেনে নেওয়া হবে না।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বিরোধী জোটের তরফ থেকে পওয়ারকে রাজি করানোর প্রবল চেষ্টা চলছে। পওয়ার রাজি না হলে বিকল্প হিসেবে অন্য কোনও নাম অবশ্য এখনও বিরোধীদের কাছে নেই। তবে পওয়ার এখনও পর্যন্ত ‘না’ বলেননি। আবার তিনি রাজি হয়ে গিয়েছেন, এমনও নয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি ও শরিক দলের হাতে মোট ভোটের ৪৮.৯% ভোট রয়েছে। পওয়ার রাজি হলে এনডিএ ছাড়া সিংহ ভাগ দলকে এককাট্টা করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিজেপির সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই হবে।
এখনও পর্যন্ত নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দল ও জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস বিজেপির প্রার্থীকেই ভোট দেবে বলে বিরোধী শিবির মনে করছে। তা হলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সব বিরোধী দল এককাট্টা হলে লোকসভা ভোটেও তার আঁচ পড়বে। বিরোধী জোটের মহড়াও হয়ে থাকবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।