ফাইল ছবি
জার্মানিতে ২৬ জুন শুরু হচ্ছে জি-৭ সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যোগদান করবেন ওই বৈঠকে। তাই প্রধানমন্ত্রীর জার্মানি যাওয়ার আগেই শাসক শিবিরের রাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থী চূড়ান্ত করে ফেলা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে যাঁকে বেছে নেওয়া হবে তাঁর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময়ে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে আজ একটি প্রচার ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করেছে বিজেপি। ১৪ সদস্যের ওই কমিটির আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত।
এর আগে সর্বসম্মত প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে শরিক ও বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনার জন্য দলীয় সভাপতি জেপি নড্ডা ও বর্ষীয়ান নেতা রাজনাথ সিংহকে নিয়ে একটি কমিটি গড়েছিল দল। তাঁরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিরোধী নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বললেও, শাসক শিবিরের প্রার্থী কে হবেন তা স্পষ্ট করেননি। আজ পরবর্তী পদক্ষেপে এনডিএ শিবিরের প্রার্থীর হয়ে দেশ জুড়ে প্রচার ও শরিক দলগুলির ভোট যাতে শাসক শিবিরের পক্ষে থাকে তা নিশ্চিত করতে ওই প্রচার ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। শেখওয়াতের সঙ্গেই ওই কমিটিতে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, আয়ুষ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী পওয়ারেরা। আগামী দিনে দল রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী বেছে নেওয়ার পরে সেই প্রার্থীর হয়ে দেশ জুড়ে প্রচারের দায়িত্বে থাকবে ওই কমিটি। এ ছাড়া বিভিন্ন শরিক দল ও দলের রাজ্য শাখাগুলি ও দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে ওই কমিটি।
অন্য দিকে বিরোধী শিবির রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপালকৃষ্ণ গান্ধী বা ফারুক আবদুল্লাকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করালে তেমন কঠিন লড়াই হবে না বলেই মনে করছে শিবসেনা। গত বুধবার দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে ১৭টি বিরোধী দলের বৈঠকে শরদ পওয়ার বিরোধী শিবিরের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তার পরে মমতা গোপালকৃষ্ণ ও ফারুকের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। এখনও এই দু’জনের কেউই সায় দেননি। তার আগেই ডিএমকে ও শিবসেনা শিবির থেকে এই দুই নাম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রের খবর, ডিএমকে ঘরোয়া স্তরে গোপালকৃষ্ণের নামে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে। অন্য দিকে শিবসেনা আজ দলীয় মুখপত্রে সরাসরিই বলেছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শক্তপোক্ত প্রার্থী চাই।
আজ শিবসেনা-র মুখপত্র সামনা-র সম্পাদকীয়তে বিরোধী শিবিরকে ওজনদার কাউকে প্রার্থী করার ডাক দেওয়া হয়েছে। শিবসেনার বক্তব্য, তা না পারলে মানুষ প্রশ্ন করবে, বিরোধীরা যদি রাষ্ট্রপতি পদেই ওজনদার প্রার্থী দিতে না পারেন, তা হলে যোগ্য প্রধানমন্ত্রী দেবেন কী ভাবে? গোপালকৃষ্ণ ও ফারুকের নাম নিয়ে শিবসেনার বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হলে এই ধরনের নাম উঠে আসে। কিন্তু এঁরা কেউই বিজেপি শিবিরের সঙ্গে লড়াই পারবেন না।
আগামী মঙ্গলবার, ২১ জুন দিল্লিতে বিরোধী দলগুলির ফের বৈঠক বসতে চলেছে। সংসদের অ্যানেক্সিতে এই বৈঠকে শরদ পওয়ারই সভাপতিত্ব করবেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে যোগ দেবেন না বলেই সূত্রের খবর। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিরোধী শিবিরের মধ্যে থেকেও অন্য কোনও নাম উঠে আসেনি। কংগ্রেসও কোনও নাম প্রস্তাব করেনি বলে সূত্রের খবর। কংগ্রেসের পুরো নজরই এখন হাসপাতালে ভর্তি সনিয়া গান্ধীর চিকিৎসা, রাহুল গান্ধীকে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের দিকে। শিবসেনার মতে, অনেক আগে থেকে এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা উচিত ছিল। বাকি বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, শিবসেনা নিজে কেন কোনও সর্বজনগ্রাহ্য নাম প্রস্তাব করছে না!
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।