পোস্টারে লেখা ‘ডিপার্টমেন্ট এথিক্স আন্ডার মেনটেন্যান্স’। নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুরে খাতা বিতর্কের জের। গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধানের ঘরে তালা ঝোলালেন স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়ারা। সোমবার তালা দেওয়ার পাশাপাশি, ঘরের দরজায় পোস্টারও লেখা হয়, ‘ডিপার্টমেন্ট এথিক্স আন্ডার মেনটেন্যান্স’। এর আগে খাতা না দেখে কেন নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেই বিষয়ে কৈফিয়ত চেয়ে বিভাগীয় প্রধান ও ডিনকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছিল।
এই বিষয়ে ছাত্রনেতা কিশলয় রায় বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে হয়ে চলা অনিয়মের বিরুদ্ধে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়ারা প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যত দিন প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান এবং বাকিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া হচ্ছে, তত দিন আমরা এই আন্দোলনে অনড় থাকব। ক্লাস না করার বিষয়টিও বহাল থাকছে।”
বেশ কয়েকদিন ধরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগকে ঘিরে বিতর্ক চলছে। অভিযোগ, ওই বিভাগের ২০২৩-’২৫ ব্যাচের ‘ল অ্যান্ড এথিক্স’ বিষয়ের ৫০টি খাতা না দেখেই নম্বর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই সরব হয় ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের একাংশ। গত সোমবার উপাচার্যের ঘরের বাইরে অনশনও শুরু হয়। শেষে রাতের দিকে কর্তৃপক্ষ লিখিত ভাবে শুক্রবারের মধ্যে ফলপ্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিলে অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এর পরেও ফলপ্রকাশ না হওয়ায় ২০২৩-’২৫ ব্যাচের পড়ুয়ারা বৃহস্পতিবার বিভাগে গিয়ে তাঁদের ইন্টারনাল পরীক্ষার খাতা দেখতে চান। খাতার বান্ডিল খুলে দেখা যায়, তাতে কোনও কলমের আঁচড় পর্যন্ত নেই! তার জেরে বিক্ষোভ শুরু হয়।
এর পরেই পড়ুয়ারা অন্তর্বর্তী উপাচার্যের কাছে এক্সটারনাল সিমেস্টারের খাতা দেখানোর দাবি তোলেন। সিদ্ধান্ত হয়, শুক্রবার সেই খাতা পরীক্ষার্থীদের দেখানো হবে। সেই মতো শুক্রবার বিভাগীয় প্রধান পার্থসারথি চক্রবর্তী খাতা দেখান। উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন পর্যবেক্ষক তথা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইমনকল্যাণ লাহিড়ী, ডিন এবং পড়ুয়াদের দুই প্রতিনিধি।
পড়ুয়ারা আগেই জানিয়েছিলেন, অভিযুক্ত দুই অধ্যাপককে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) না করা হলে সোমবার থেকে ক্লাস করবেন না। এক পড়ুয়ার দাবি, অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত দুই অধ্যাপককে শোকজ় নোটিস পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘পড়ুয়ারা অভিযোগ করেছেন। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’