Ayodhya

চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, লখনউ পৌঁছলেন মোদী

যে ১৩৫ জন সাধু-সন্ত ভূমিপুজোয় যোগ দেবেন, তাঁদের সকলের হাতে একটি করে রৌপ্যমুদ্রা তুলে দেওয়া হবে।

Advertisement

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

অযোধ্যা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০১:২৯
Share:

দিল্লি থেকে বিমানে ওঠার সময় প্রধানমন্ত্রী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই অযোধ্যায় ভূমিপুজো শুরু হতে চলেছে। তার আগে লখনউ পৌঁছে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ দিন সকাল ৯টা বেজে ৩৫ মিনিটে দিল্লি থেকে বিমানে ওঠেন তিনি। তার পর সাড়ে ১০টা নাগাদ লখনউ পৌঁছে যান। সেখান থেকে প্রথমে হনুমানগঢ়ী যাবেন। তার পর রাম জন্মভূমির উদ্দেশে রওনা দেবেন।

Advertisement

ইতিমধ্যেই রাম জন্মভূমি পৌঁছে গিয়েছেন বাবা রামদেব-সহ বিশিষ্ট অতিথিরা। অযোধ্যায় থাকলেও করোনা কালে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ভূমিপুজোয় অংশ নেবেন না বলে এর আগে জানিয়েছিলেন উমা ভারতী। কিন্তু এ দিন সকালে অনুষ্ঠানস্থলে দেখা যায় তাঁকেও। তিনি বলেন, ‘‘এ বার গোটা দুনিয়ার সামনে মাথা উঁচু করে বলা যাবে যে এ দেশে কোনও ভেদাভেদ নেই।’’

রাম মন্দিরের শিলান্যাস ঘিরে অযোধ্যায় আচার-অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে সোমবার থেকেই। ভূমিপূজনের সব প্রস্তুতিই প্রায় সম্পন্ন। আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রায় সবাই অযোধ্যায় হাজির। অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত না হলেও, শুধুমাত্র ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে আশপাশের রাজ্য থেকেও বহু মানুষ রামনগরীতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। তবে করোনার প্রকোপে গোটা দেশ যখন ত্রস্ত, অযোধ্যায় জনসমাগম সামাল দেওয়াই তখন রাজ্য প্রশাসনের প্রধান চিন্তা।

Advertisement

পঞ্জিকা মিলিয়ে আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মন্দিরের ভূমিপুজো শুরু হওয়ার কথা। এ দিন প্রথমে লখনউ বিমানবন্দরে নামবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে চেপে সাকেত কলেজের মাঠে পৌঁছবেন। তবে রামের আরাধনা শুরু করার আগে প্রথমে হনুমানগঢ়ীতে হনুমানের বিশেষ পুজো সারবেন। হনুমানগঢ়ীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যো‌গী আদিত্যনাথও। সেখান থেকে একসঙ্গে দু’কিলোমিটার দূরের রাম জন্মভূমিতে এসে পৌঁছবেন তাঁরা। সাড়ে ১২টা থেকে ভূমিপুজো শুরু হলেও ১২টা বেজে ৪০ মিনিটে মন্দিরের শিলান্যাস করবেন নরেন্দ্র মোদী। তার জন্য আগে থেকেই ৪০ কেজি ওজনের রুপোর ইট রাখা আছে। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মহন্ত নৃত্যগোপাল দাস তা দান করেছেন। তবে স্থায়ী ভাবে ইটটি সেখানে রাখা হবে না। ভূমিপুজো মিটে গেলেই সেটি সরিয়ে নেওয়া হবে।

জনসমাগম সামাল দেওয়াই প্রধান চিন্তা প্রশাসনের। ছবি: পিটিআই।

আরও পড়ুন: অযোধ্যায় কাটাবেন প্রায় তিন ঘণ্টা, দেখে নিন মোদীর আগামিকালের কর্মসূচি​


করোনা নিয়ে সতর্কতার মধ্যেও ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানে ১৭৫ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৫ জনই সাধু-সন্ত। আমন্ত্রিতদের তালিকায় রয়েছেন বাবা রামদেবও। মঙ্গলবারই অযোধ্যায় এসে পৌঁছেছেন তিনি। যে ১৩৫ জন সাধু-সন্ত ভূমিপুজোয় যোগ দেবেন, তাঁদের সকলের হাতে একটি করে রৌপ্যমুদ্রা তুলে দেওয়া হবে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি প্রয়াত অশোক সিঙ্ঘলের সংস্থা ‘অশোক সিঙ্ঘল ফাউন্ডেশন’-এর তরফে রাম-সীতা ও লক্ষ্মণের ছবি খোদাই করা ওই মুদ্রাগুলি শ্রী রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবারই অযোধ্যায় এসে পৌঁছেছেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত, সুরেশ ভাইয়াজি জোশী, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) নেতা দীনেশ চাঁদ-সহ আরও অনেকেই। তবে এঁদের মধ্যে থেকে একমাত্র মোহন ভাগবতই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেল এবং রামমন্দির ন্যাসের প্রধান নৃত্যগোপাল দাসের সঙ্গে মূল মঞ্চে থাকবেন। এর পাশাপাশি প্রধান পুরোহিত হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন সলিল সিঙ্ঘল। তিনি অশোক সিঙ্ঘলের ভাইপো।

আবেগে ভাসছে গোটা অযোধ্যা। ছবি: পিটিআই।

ভূমিপুজোর জন্য সরযূ নদীর উপর ‘রাম কি পৈড়ী’ ঘাটটির চেহারাও রাতারাতি বদলে গিয়েছে। নানা রঙের রঙ্গোলি এঁকে ঘাটটিকে সাজিয়েছেন ফৈজাবাদের রাম মনোহর লোহিয়া অবধ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা। বুধবার এই ঘাটেই এক লক্ষ মাটির প্রদীপ জ্বালানো হবে। বারাণসীতে যেমন গঙ্গা আরতি হয়, ঠিক সে ভাবে বুধবার সরযূর এই ঘাটেও আরতি হওয়ার কথা। মন্দিরের স্থাপনের সূচনা যাতে শুভ হয়, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: এ রকমই দেখতে হবে অযোধ্যার রামমন্দির​

ভূমিপুজোয় প্রসাদের জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষ ব্যবস্থা করেছে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট। এক লক্ষ প্যাকেট বিকানেরি লাড্ডুর বরাত দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক প্যাকেটে চারটি করে লাড্ডু থাকবে। পুজো মিটে গেলে অতিথিদের হাতে সেই প্যাকেট তুলে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে দিল্লিতে বিভিন্ন দূতাবাসেও পৌঁছে দেওয়া হবে ওই লাড্ডুর প্যাকেট। তবে শুধু বিকানেরি লাড্ডুই নয়, আলাদা করে মোতিচূড়ের লাড্ডুরও বরাত দেওয়া হয়েছে। দিল্লি এবং লখনউয়ের নামজাদা মিষ্টির দোকানের উপর এই লাড্ডু তৈরির ভার পড়েছে। অযোধ্যার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য নৃত্যগোপাল দাসের বাসভবন মণিরাম দাস ছাওনি পীঠেও প্রায় ১ লক্ষ লাড্ডু তৈরি হচ্ছে। অযোধ্যার অতিরিক্ত জেলাশাসক পর্যায়ের এক আধিকারিকের উপর এই লাড্ডু বিতরণের দায়িত্ব পড়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement