মাস পাঁচেক আগে তাকে বুকে জড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন গরীব বাবা-মা। শিশুটিকে দেখেই কোলে তুলে চমকে গিয়েছিলেন উপস্থিত নার্স থেকে চিকিৎসক সবাই। ঠিক যেন একটা মোবাইল ফোনকে দু’হাতে তুলে নেওয়ার মতো। এতটাই কম ওজন নিয়ে জন্ম নিয়েছিল সে। জন্মের সময় তার ওজন ছিল মাত্র ৬৫০ গ্রাম। এতটাই রুগ্ন যে হাত-পা ঠিকমতো নাড়াচা়ড়া করতে পারছিল না। পরিকাঠামোহীন সরকারি হাসপাতালের কর্মীদের যত্ন এবং চিকিৎসায় আজ সেই শিশু ঋষিতার ওজন ২.৫ কেজি। সে অনেকটাই সুস্থ। বাবা-মার সঙ্গে নিজের বাড়ি ফেরার জন্য প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: এই ৮ দিক দেখেশুনে তবেই মা হওয়ার কথা ভাবুন
সময়ের ৩ মাস আগেই জন্ম হয়েছিল ঋষিতার। দৈর্ঘ্যে অনেকটা মানুষের তালুর সামান্য বেশি আর ওজন একটা মোবাইলের মতো। চোখ, মস্তিষ্ক, কানের বিকাশ ঠিকঠাক হলেও অপরিণত হওয়ায় দেহের অনেকাংশেরই বৃদ্ধি ঠিকঠাক হয়নি। যে কারণে বাঁচা মুশকিল হয়ে পড়ে ঋষিতার। যে হাসপাতালে তার জন্ম সেখান থেকেও জবাব দিয়ে দেওয়া হয়। উপায় না দেখে সন্তানকে বুকে জড়িয়ে বাড়ি ফিরে আসেন বাবা-মা। কয়েক দিন এই ভাবে বাড়িতেই ছিল ঋষিতা। কিন্তু দিনকে দিন পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে থাকে। বাধ্য হয়েই তাকে নিয়ে অন্য হাসপাতালের দরজায় কড়া নাড়া শুরু করেন তাঁরা। সব হাসপাতালই ফিরিয়ে দিচ্ছিল। সামর্থ্য ছিল না উন্নত পরিকাঠামোর কোনও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর। অবশেষে তেলেঙ্গনার একটি ছোট্ট সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ঋষিতাকে। প্রায় চিকিৎসকদের হাতে –পায়ে ধরে কোনওমতে তার চিকিৎসায় রাজি করান তাঁরা। টানা ৫ মাসের চিকিৎসায় ঋষিতা এখন অন্য ঋষিতা।
ঋষিতাকে সুস্থ করতে পেরে গর্বিত চিকিৎসক ভি দামেরাও। তিনি জানান, এত অপরিণত শিশুর চিকিৎসার পরিকাঠামো হাসপাতালে নেই। তা সত্ত্বেও বাবা-মায়ের কথা ফেলতে পারেননি তিনি। ঝুঁকি ছিল। কিন্তু এই কয়েক মাস প্রাণপন খেটেছেন সকলেই। একজন নার্স সব সময় তার কাছে থাকতেন।