ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি এক পক্ষকালের মধ্যে তিন-তিন বার এনসিপি-র শীর্ষ নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে দেখা করেছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পি কে)। বিজেপিবিরোধী জোট গড়তে তিনি পওয়ারকে সেতুবন্ধনের জন্য অনুরোধ করেছেন বলেও সূত্রের খবর। এই প্রেক্ষাপটে আজ, মঙ্গলবার এনসিপি সূত্রে জানা গিয়েছে, পওয়ারের সঙ্গে বৈঠকে পি কে জানিয়েছেন, আগে নিজে বিহারে একটি রাজনৈতিক দল গড়ে তারপরে সারা দেশে বিজেপিবিরোধী ‘লিঙ্কম্যানের’ কাজ করতে আগ্রহী তিনি। পওয়ারের সঙ্গে যেহেতু বিভিন্ন আঞ্চলিক দল এবং কংগ্রেসের সুসম্পর্ক রয়েছে, সেই কারণেই ওই পোড়খাওয়া নেতার কাছে তিনি সাহায্য প্রত্যাশী।
ওই বিজেপিবিরোধী প্রস্তাবিত জোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্য ভূমিকায় থাকবেন, এমন অনুমানের কথাও পওয়ারকে জানিয়েছেন পি কে। সূত্রের মতে, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল ৩০টির বেশি আসন পাবে বলে তাঁর ধারণা।
কিন্তু রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, পি কে কোনও নেতা নন। নেহাতই পেশাদার ভোটকুশলী। সে কাজে তাঁর ব্যাটে যথেষ্ট রানও রয়েছে। কিন্তু কোনও রাজ্যে গিয়ে সেখানকার রাজনৈতিক দলকে পেশাদার ভাবে ভোটের রণনীতি তৈরিতে সাহায্য করে সাফল্য এনে দেওয়া এক বিষয়। আর সারা দেশের বিরোধী রাজনীতির রাশ নিজের হাতে রেখে চালনা করা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বিষয়। দু’য়ের মধ্যে কোনও তুলনা চলে না। তাই এই প্রশান্ত কিশোরকে কেন কংগ্রেস, ডিএমকে, শিবসেনা, এসপি, আপ বা বামেরা গ্রাহ্য করবে, সেই প্রশ্ন উঠছে।
সূত্রের মতে, এই কারণে ভোটকুশলী পরিচয় বজায় রেখেই এ বার তার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চান পি কে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিরাট সাফল্যের পরে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, রাজ্যে-রাজ্যে গিয়ে এই একই কাজ করতে তাঁর আর আগ্রহ নেই।
বিহারে যে রাজনৈতিক দল পি কে গড়তে চলেছেন, তার কাজ প্রায় শেষের দিকে বলে সূত্রের খবর। বিষয়টির সূত্রপাত অনেক আগে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে তাঁর বিরোধিতার মাধ্যমে। অতিমারি শুরুর ঠিক আগে ‘বাত বিহার কি’ বলে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন পি কে। দেশের রাজনীতিতে নতুন মুখের সন্ধান শুরু হয়েছিল এর মাধ্যমে। বিহারের তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছিলেন। তবে বিহার নির্বাচনে কোনও দল গড়ে লড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন তখন। তার উপরে গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে হওয়া বিহার নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁচিয়ে রাখতে নীতীশ আদর্শগত সমঝোতা করেছেন বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।
রাজনৈতিক দল গড়লেও, নিজের ভূমিকাকে আপাতত সেই লিঙ্কম্যান বা মাঝমাঠের খেলোয়াড় হিসেবেই আপাতত দেখতে চাইছেন পি কে। তাঁর বাড়িয়ে দেওয়া পাস থেকে আগামী লোকসভা ভোটে কে বিজেপিকে কত গোল দিতে পারবে, তার উত্তর পেতে অবশ্য অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই।