প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র।
বাংলায় ‘গণতন্ত্র বাঁচানো’র গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে। ২০২২-এ পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসকে বৈতরণী পার করার দায়িত্বও কার্যত এসে পড়ল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের উপর। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের প্রধান উপদেষ্টা নিযুক্ত হলেন তিনি।
’২১-এর বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে এই মুহূর্তে ব্যস্ত প্রশান্ত। তার মধ্যেই সোমবার টুইটারে তাঁর নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন অমরেন্দ্র। তিনি লেখেন, ‘আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, প্রশান্ত কিশোরকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করেছি। পঞ্জাবের মানুষের কল্যাণের জন্য একসঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি’।
২০১৭ সালেও অমরেন্দ্র সিংহের নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্বে ছিল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ‘আইপ্যাক’। কিন্তু সেই সময় তাঁর রীতিনীতি পছন্দ হয়নি অমরেন্দ্রর। তার আগে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গেও খটাখটি বেধেছিল প্রশান্তের। সে কথা মাথায় রেখে প্রশান্তর ঠিক করা সমস্ত প্রচার অনুষ্ঠানই কাটছাঁট করতেন অমরেন্দ্র।
তার পরেও রাজ্যে কংগ্রেসই ক্ষমতাদখল করে। সেই সময় অমরেন্দ্র জয়ের কৃতিত্ব যদিও প্রশান্তকে দিতে ভোলেননি, কিন্তু সম্পর্কের ফাটল মেলায়নি। ২০২০-তে প্রশান্তের মন্তব্যেও মনোমালিন্যের ইঙ্গিত মেলে। ফের অমরেন্দ্রর সঙ্গে কাজ করবেন কি না জানতে চাইলে সাফ জানিয়ে দেন, সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দিলে তবেই ফের কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করার কথা ভাববেন।
তবে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিজেপি-কে প্রতিহত করাই মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বিরোধী দলগুলির। বিজেপি-র বিরোধিতায় নীতীশ কুমারের সঙ্গ ত্যাগ করা প্রশান্ত তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাই ‘বৃহত্তর স্বার্থ’-এ তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।
তবে পঞ্জাব সরকারের একটি সূত্রের দাবি, কৃষি আন্দোলন বিজেপি-র বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পারলেও, ২০১৭-র নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি এখনও সম্পূর্ণ ভাবে রক্ষা করতে পারেননি অমরেন্দ্র। সেই কাজেই হাত লাগাবেন প্রশান্ত। বাংলার ভোটপর্ব মিটিয়েই পঞ্জাব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন তিনি।
তবে গত কয়েক বছরে বিজেপি-বিরোধী হিসেবে উঠে এলেও, ২০১৪-র বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর প্রচারের কামান তাঁর কাঁধেই ছিল।