প্রশান্ত ভূষণ। ফাইল চিত্র।
নিজের করা টুইট নিয়ে ক্ষমা তো চাইলেনই না, উল্টে সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের তীব্র সমালোচনা করলেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। সোমবার এক বিবৃতি দিয়ে প্রশান্ত বলেন, “ক্ষমা অন্তর থেকে চাওয়া উচিত। আমি যদি আন্তরিক না হয়ে ক্ষমা চাই তা হলে সেটা আমার বিবেকের অবমাননা হবে। সে ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানেরও (সুপ্রিম কোর্টের) অবমাননা হবে।”
প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে নাগপুরে একটি বিখ্যাত ব্র্যান্ডের মোটরবাইকে চড়ে রয়েছেন— এমন একটি ছবি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছিল। এর পরেই প্রশান্ত ভূষণ টুইট করেন, ‘‘এ সব দিকে নজর না-দিয়ে প্রধান বিচারপতি দামী মোটরবাইকে চড়ছেন।’’ প্রধান বিচারপতির মাথায় হেলমেট নেই কেন, তা নিয়েও প্রশ্নও তোলেন ভূষণ। দ্বিতীয় একটি টুইটেও সর্বোচ্চ আদালতের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রবীণ এই আইনজীবী।
এর পরই প্রশান্তের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার একটি মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় গত ১৫ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট দোষী তাঁকে সাব্যস্ত করে। শুনানির সময়ে প্রশান্ত যুক্তি দেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকারের বলেই তিনি টুইটে নিজের কথা বলেছেন। এর ফলে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা পড়েনি, আদালতের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়নি। তাই নিজের টুইটে যা বলেছেন, তা থেকে সরবেন না। প্রধান বিচারপতির যুক্তি মেনে বক্তব্যের ওই অংশটুকুই শুধু প্রত্যাহার করতে পারেন, যেখানে হেলমেট না-পরার কথা বলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিজেপির সঙ্গে আঁতাত নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি রাহুল, টুইট মুছলেন সিব্বল
সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছে, বিচার ব্যবস্থা গণতন্ত্রের শুধু একটি স্তম্ভই নয়, প্রধান স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটাকে ধরে রাখে আদালত ও বিচারব্যবস্থা। তাই বিচারপতি ও আদালতের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ গণতন্ত্রের উপরে আক্রমণের সামিল। ভূষণের মতো অভিজ্ঞ আইনজীবীর কাছে তা আশা করা যায় না। তিনি আদালত অবমাননা করেছেন।
প্রশান্তকে তাঁর অবস্থান পুনর্বিবেচনার জন্য ২৪ অগস্ট পর্যন্ত সময় দেয় শীর্ষ আদালত। এর মধ্যে তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে ২৫ অগস্ট শাস্তি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে দেয় বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারীর বেঞ্চ। যদিও প্রশান্ত পাল্টা জানিয়ে দেন, আইন অনুযায়ী যা শাস্তি হবে, তা তিনি মাথা পেতে নেবেন। কিন্তু ক্ষমা চাইবেন না।