শপথে গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, নরেন্দ্র মোদী এবং সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া। ছবি: পিটিআই।
হাতের কাছে শপথবাক্যের খসড়াটি পৌঁছতেই মুচকি হাসি ফুটল রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মুখে।
তার পরেই তাঁর সচিব নাম ঘোষণা করলেন। সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া। রাষ্ট্রপতির মুখের হাসি বোধহয় বঙ্গ-যোগের। কিংবা দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের। শপথবাক্য পাঠ করেই রাষ্ট্রপতির পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন অহলুওয়ালিয়া। বাকি ১৯ মন্ত্রীর মধ্যে আর যেটি আজ কেউ করেননি। এমন হাসি ফের তাঁর মুখে দেখা গেল আর এক বঙ্গসন্তান এম জে আকবরের শপথের সময়েও।
বাংলায় ক্ষমতা দখলের ধারেকাছে যেতে পারেনি বিজেপি। কিন্তু হাতে গোনা মাত্র দু’জন সাংসদের মধ্যে দু’জনেই এ বারে মন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারে। আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় আগেই নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। আজ হলেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়াও। বিজেপির এক নেতা রসিকতা করে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে একেবারে একশোতে একশো। একশো শতাংশ সাংসদই এখন মন্ত্রী।’’ আকবরের জন্মভূমি কলকাতা হলেও তিনি এখন রাজ্যসভার সাংসদ প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড থেকে।
কাল জন্মদিনেই দলের সভাপতি অমিত শাহের কাছ থেকে সুখবরটি পেয়েছিলেন অহলুওয়ালিয়া। তাঁর নাম ভেসে আসতেই দিল্লির অলিন্দে আলোচনা শুরু হয়, অরুণ জেটলি-বিরোধী ও সুষমা স্বরাজের ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্যই গত বার তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি। এ বারে তা হলে তাঁকে মন্ত্রিসভায় নেওয়ার কারণ কী মোদীর? তা হলে কি পঞ্জাব নির্বাচনের আগে এক জন শিখকে মন্ত্রী করে বার্তা দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী?
আরও পড়ুন: মায়ের সঙ্গে লাগাতার লড়েও আজ মন্ত্রী অনুপ্রিয়া
তাঁকে কেন আগে মন্ত্রী করা হল না, তার সাফাই দিয়ে অহলুওয়ালিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘এর আগে আমার ছোট ভাই ও বন্ধু বাবুল মন্ত্রী হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। কিন্তু তখন থেকেই প্রধানমন্ত্রী আমাকে অন্য ভাবে তাঁর টিমের অংশ করেছিলেন। বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আমাকে। জমি বিলের দায়িত্বও দিয়েছিলেন।’’ এ বারে তাহলে মন্ত্রী হিসেবে তাঁর লক্ষ্য কী? সদ্য বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেই ভোট লড়েছে বিজেপি। মন্ত্রী হিসেবে তাঁর লক্ষ্য?
অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘মমতা যেমন গরিবদের জন্য কাজ করতে চাইছেন, নরেন্দ্র মোদীও তাই চাইছেন। মমতা জয়ী হওয়ার পর খোদ প্রধানমন্ত্রী টেলিফোন করে বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের প্রতি তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তাঁর সরকারের মন্ত্রী হয়ে আমারও সেই একই মত। রাজ্যের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করাই আমার লক্ষ্য।’’