National News

অগুস্তা-ওয়েস্টল্যান্ড চুক্তিতে শুধু প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আপত্তি ছিল, নয়া চার্জশিটে দাবি ইডির

টাকা দেওয়া হয়েছিল মিশেল এবং গাইডো হাশকে নামে অন্য এক জনের মাধ্যমে। এর মধ্যে চার কোটি ৪২ লক্ষ ইউরো প্রথমে গিয়েছিল মিশেলের সংস্থা দু’টি সংস্থায়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:০০
Share:

অগুস্তাওয়েস্টল্যান্ড চপার কেলেঙ্কারি নিয়ে নতুন সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট। —ফাইল চিত্র

অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড চপার কেলেঙ্কারিতে নতুন করে অস্বস্তিতে কংগ্রেস। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) দাবি, এই চুক্তিতে তদ্বির করেছিল ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, আমলা, সংবাদমাধ্যম এবং সেই সময়ের শাসক দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা’। অর্থাৎ কংগ্রেস তথা ইউপিএ জমানার প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা। তবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ক্লিনচিট দিয়েছে এই চার্জশিট। চার্জশিটের একটি অংশে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘প্রায় সকলে রাজি থাকলেও অর্থমন্ত্রী (তৎকালীন) ছাড়পত্র দিচ্ছেন না।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার দিল্লির বিশেষ আদালতে পেশ করা ইডির এই চার্জশিট ‘চপারগেট’-এ নতুন করে অস্বস্তি বেড়েছে কংগ্রেসের। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেসের পাল্টা তোপ, লোকসভা ভোটের মুখে ‘নির্বাচনী স্টান্ট’ বিজেপির।

বৃহস্পতিবার এই নিয়ে চতুর্থ বার চার্জশিট দিল ইডি। অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড কেলেঙ্কারিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি মূল অভিযুক্ত দালাল ক্রিশ্চিয়ান মিশেলের একাধিক ‘কোড’-এর সমাধান করতে পেরেছে বলে ইঙ্গিত ইডির চার্জশিটে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে ‘ফ্যাম’ অর্থাৎ ‘ফ্যামিলি’, ‘এপি’ বলতে বোঝানো হয়েছে এক শীর্ষ কংগ্রেস নেতাকে। পাশাপাশি কী ভাবে কোন পথে ৭ কোটি ইউরো ভারতীয় বায়ুসেনা, আমলা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের শীর্ষকর্তাদের এবং সেই সময়কার শাসক দলের শীর্ষ নেতাদের দেওয়া হয়েছিল, তার দিশা দেখানোর চেষ্টা হয়েছে এই চার্জশিটে।

Advertisement

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের এফ-১৬ ধ্বংস হয়েছিল? প্রশ্ন তুলল মার্কিন প্রতিবেদন

আরও পড়ুন: বায়ুমণ্ডলেই জ্বলে যাবে টুকরো, এ-স্যাট নিয়ে নাসার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিল পেন্টাগন

কিন্তু সেই টাকা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া ছিল অত্যন্ত জটিল। মূল পদ্ধতি হাওয়ালা হলেও বহু হাত ঘুরে সেই টাকা এসেছিল। আর টাকা দেওয়া হয়েছিল মিশেল এবং গাইডো হাশকে নামে অন্য এক জনের মাধ্যমে। এর মধ্যে চার কোটি ৪২ লক্ষ ইউরো প্রথমে গিয়েছিল মিশেলের সংস্থা দু’টি সংস্থায়। বাকি ২৮ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছিল হাশকের টিউনিশিয়ার একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তার পর সেই টাকা অনেক হাত ঘুরে সেই টাকা ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রভাবশালীদের দেওয়া হয়েছিল।

এর পাশাপাশি ৫২ পাতা এবং ৩০০০ পাতার নথিপত্র-সহ চার্জশিটে ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে চালাচালি হওয়া ক্রিশ্চিয়ান মিশেলের একাধিক ‘বার্তা’ (ডিসপ্যাচ) যুক্ত করেছে ইডি। মিশেলের একটি বার্তা ব্যাখ্যা করে চার্জশিটে ইডির দাবি, ‘‘চুক্তির পিছনে অন্যতম শক্তি ছিলেন মিসেস গান্ধী। এই সব ‘বার্তা’ থেকেই স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে রাজনৈতিক ভিভিআইপি-রা অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ডকে সাহায্য করতে অর্থমন্ত্রী এবং তাঁর উপদেষ্টাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

চার্জশিটের অন্য একটি ‘বার্তা’য় অগুস্তা বলেছে, ‘‘সপ্তাহের শুরুতে ইতালীয় মহিলার ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে বৈঠক... ওই ব্যক্তি নিশ্চিত করেছেন, এই ছেলে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী এবং দলে তাঁর ক্ষমতা দিন দিন বাড়বে। সেই কারণেই এই উত্থান নিয়ে অর্থমন্ত্রী বিরক্ত।’’ মিশেলের আরও একটি বার্তার উল্লেখ করে চার্জশিটে দাবি, ‘চুক্তির নথিপত্র’ ‘‘স্বরাষ্ট্র, অর্থ, বিদেশ, প্রতিরক্ষা এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং দলের শীর্ষ নেতাদের পাঠানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও আপত্তি নেই।’’

বৃহস্পতিবার বিশেষ আদালতের বিচারক অরবিন্দ কুমারের এজলাসে পেশ করে ইডি। আগের চার্জশিটের সঙ্গে আরও তিন অভিযুক্তকে যুক্ত করা হয়েছে এই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে। অভিযুক্তদের তদন্তের জন্য ডাকা হবে কিনা, ইডির চার্জশিট খতিয়ে দেখে আগামী ৬ এপ্রিল সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশেষ আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement