টাকার বরাদ্দ নেই। তাই খালি রয়েছে আধাসামরিক বাহিনীর প্রায় ৭৩ হাজার পদ। ফলে মাওবাদী মোকাবিলা থেকে জঙ্গি দমন— সব ক্ষেত্রেই আপস করতে হচ্ছে কেন্দ্রকে।
মাওবাদী দমনের রণনীতি ঠিক করতে দশ রাজ্যের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। দিল্লিতে গত সপ্তাহের সেই বৈঠকে ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হামলা বন্ধ করতে ‘মিশন সুকমা’ অপারেশন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। অন্য রাজ্য থেকে আধা সেনা ছত্তীসগঢ়ে পাঠানোর তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অভ্যন্তরে। বাহিনী কমানোর প্রশ্নে কোপ পড়তে চলেছে আপাত ভাবে শান্ত পশ্চিমবঙ্গের উপরে। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘যত আধা সেনা দরকার, তা থাকলে এ ভাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বাহিনী সরাতে হতো না।’’ মন্ত্রক মনে করছে, বাহিনী সরানো নিরাপত্তার কারণেই ঝুঁকির বিষয়। সে ক্ষেত্রে ওই সব এলাকায় মাওবাদী তৎপরতা ফের বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৬-র পরিসংখ্যান বলছে, সব থেকে বেশি শূন্য পদ রয়েছে সিআরপি-তে। এই সংখ্যা প্রায় ২৪ হাজার। অথচ, মাওবাদী দমনের মূল দায়িত্ব রয়েছে এই বাহিনীর ঘাড়েই। আর এসএসবি, আইটিবিপি, বিএসএফের মতো সব ক’টি আধা সামরিক বাহিনী মিলিয়ে খালি পদের সংখ্যা ৭৩ হাজার ৪৬৪টি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রণ রেখা বাদ দিলে দেশের উপদ্রুত এলাকাগুলিতে শান্তিরক্ষার কাজে আধা সেনা ব্যবহার হয়। এই মুহূর্তে আধা সেনার ৩৪.৬৫% বিভিন্ন রাজ্যে মাওবাদী দমনে মোতায়েন রয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারত ও কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে যথাক্রমে ২২.৬০% ও ১৭.৫৭ % আধা সেনা। ২৫.১৮% আধা সেনা ব্যবহার করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলির নিরাপত্তায়।
পদ খালি থাকার পিছনে অর্থকরী সমস্যা একটি বড় কারণ। মন্ত্রকের পর্যাপ্ত বাজেটের অভাব, নিয়োগে ছাড়পত্র দিতে অর্থ মন্ত্রকের গড়িমসির মতো একাধিক কারণে পদ খালি থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অন্দরে। নিয়োগের প্রশ্নে দ্রুত অর্থ মন্ত্রকের ছাড়পত্রের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ স্তর থেকে তদ্বিরও করা হয়েছে । সরকারি ভাবে খালি পদ থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েও মন্ত্রক দাবি করেছে, আধা সামরিক বাহিনীগুলিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।