গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
দীপাবলির এখনও বাকি দু’দিন। তার আগেই ‘অত্যন্ত খারাপ’ পর্যায়ে পৌঁছে গেল দিল্লির বায়ুদূষণের মাত্রা। দিনভর ঘন ধোঁয়াশায় ঢেকে রইল রাজধানী। দেখা গেল না সূর্যের মুখ। অন্যান্য বার দিল্লির এই ছবি দেখা যায় ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে। সেখানে এ বার যে ভাবে প্রায় দু’মাস আগে থেকেই দূষিত বাতাসে ঢেকেছে গোটা রাজধানী, তাতে আশঙ্কায় পরিবেশবিদেরা। তাঁদের মতে, চলতি শীতে অনেক বেশি মানুষ দূষণজনিত রোগের শিকার হতে চলেছেন। পরিস্থিতি সামলাতে আজ জরুরি বৈঠক ডাকেন কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ইটভাটাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল আগেই। বন্ধ যাবতীয় নির্মাণকাজ। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় শুরু হয়েছে পাইপে করে জল ছিটোনোর কাজ। তা সত্ত্বেও দিল্লির দূষণ এখন সহনসীমার কুড়ি গুণেরও বেশি। আজ রাজধানীতে বায়ুর গুণগত সূচক ছিল ৪১৮। যে বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়া, দিনে ১৮-২০টি সিগারেট খাওয়ার সমান। ভীষণ ভাবে বেড়ে গিয়েছে মাস্ক বিক্রি। গত ৩ তারিখে গঙ্গারাম হাসপাতালের পার্কিং লটের বাইরে ফুসফুসের মডেল বসিয়েছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দূষণে দু’দিনেই তা কালো হয়ে গিয়েছে।
পরিবেশবিদদের মতে, পঞ্জাব ও হরিয়ানার খেতে আগাছা পোড়ানো বন্ধ না-হওয়া পর্যন্ত দিল্লির বায়ুদূষণ এড়ানো সম্ভব নয়। গত এক সপ্তাহ ধরে দিল্লি বায়ুদূষণের কবলে থাকলেও ওই দুই রাজ্যে আগাছা পোড়ানো বন্ধ হয়নি। সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি কোনও পদক্ষেপ না-করায় ভুগতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। এর সঙ্গে জুড়েছে ‘গুরুজ্যাম’। দিল্লি-গুরুগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের রোজকার জ্যামকে এই নামই দিয়েছেন স্থানীয়রা। আজ সন্ধ্যায় ওই রাস্তায় প্রায় ৬ কিলোমিটার লম্বা জ্যামের জন্য অনেকে দায়ী করেছেন ‘ধনতেরাসের’ কেনাকাটা করতে বেরোনো ভিড়কে!
দূষণ নিয়ে অবশ্য রাজনীতি থামেনি। আজ দিল্লির আপ ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে সরাসরি দায়ী করেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘ফসলের আগাছা পোড়ানো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করেছে কংগ্রেস-শাসিত পঞ্জাব। কিন্তু হরিয়ানার বিজেপি সরকার তা করতে ব্যর্থ। গত কয়েক বছর ধরে দিল্লির পঞ্চম ঋতু হল দূষণ। স্বচ্ছ ভারত নিয়ে সরব প্রধানমন্ত্রী এখন কেন কথা বলছেন না? তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসী অন্যতম দূষিত শহর কেন, সেই জবাবও দিতে হবে মোদীকে।’’