প্রতীকী ছবি।
মন্দিরের সামনে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণে রবিবার মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। তামিলনাড়ুর কোয়েম্বত্তূরের সেই ঘটনায় নিহতের জঙ্গি-যোগের জল্পনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। রবিবার রাতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে আন্নামালাই টুইট করেন, ‘‘এটা স্পষ্ট সন্ত্রাস। আইএস-এর যোগ রয়েছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী কি প্রকাশ্যে মেনে নেবেন? তামিলনাড়ু সরকার তথ্য গোপন করছে।’’ বিজেপি ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছে।
মন্দিরে হামলার ছক ব্যর্থ হয়েই কি বিস্ফোরণ? তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিকের দাবি, ‘‘এ ব্যাপারে এখনও কোনও প্রমাণ নেই। ঘটনাস্থল মন্দিরের কাছে, শুধু এটুকুই।’’ অবশ্য সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্রের কথা পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি তামিলনাড়ু পুলিশের ডিজি সি সিলেন্দ্রবাবু। তিনি জানান, সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোর ৪টে নাগাদ জেমিশা মুবিন নামে বছর পঁচিশের ওই যুবক গাড়িতে দু’টি এলপিজি সিলিন্ডার এবং পেরেকের মতো কিছু জিনিস নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বিস্ফোরণ হয়। মৃত্যু হয় তাঁর। পরে মুবিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পটাশিয়াম নাইট্রেট, অ্যালুমিনিয়াম পাউডার, সালফার এবং কাঠকয়লার মতো বিস্ফোরক তৈরির উপাদান মিলেছে।
২০১৯ সালের এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার কলম্বো ও আশপাশের এলাকায় আটটি ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। আড়াইশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার মূলচক্রী জাহরান হাশিমের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল তামিলনাড়ুতে আইএস-এর অন্যতম মাথা মহম্মদ আজহারউদ্দিনের। যাকে ঘটনার পরে গ্রেফতারও করা হয়।
জানা যাচ্ছে, ওই বছর কোয়েম্বত্তূরের একটি মসজিদে তামিলনাড়ু তৌহিদ জামাতের (টিএনটিজে) প্রার্থনা শিবিরে যোগদানের কথা বলে যে পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তাঁদের এক জন মুবিন। শিবিরটিতে আজহারউদ্দিনও ছিল। এক তদন্তকারীর অবশ্য বক্তব্য, প্রার্থনা শিবিরে যাওয়া নিয়ে এনআইএ-তদন্ত ছাড়া মুবিনের বিরুদ্ধে আর কোনও মামলা নেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, মুবিনের বাড়ির কাছের একটি আবাসনের নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি আরও তিন জনের সঙ্গে বাড়ির ভিতর থেকে একটা ভারী সাদা ব্যাগ টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। তদন্তকারীদের অনুমান, তাতে দু’টি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। বিস্ফোরণের পরে গাড়ি থেকে ৩৫ কিলোগ্রামের একটি বাণিজ্যিক গ্যাস সিলিন্ডার অক্ষত অবস্থায় মিলেছে। অন্যটিতে বিস্ফোরণ হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
তামিলনাড়ু পুলিশের ছ’টি দল ঘটনার তদন্ত করছে। জানা যাচ্ছে, মুবিন বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী মূক ও বধির। দু’জন আলাদা থাকতেন। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে মুবিনের সঙ্গে সম্প্রতি যোগাযোগ হওয়া সাত জনকে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সমাজমাধ্যমে মুবিনের গতিবিধিও। দেখা হচ্ছে, সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে কারা এসেছিলেন।