ফাইল চিত্র। পিটিআই।
একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভার ভোট করানো নিয়ে দু’টি দলে ভাগ হয়ে গেল রাজনৈতিক দলগুলি। শুধু মাত্র চারটি দলই এক সঙ্গে ভোট করানোর পক্ষে সায় দিয়েছে। প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে ন’টি দল।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মতামত জানতে একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিল আইন কমিশন। সেখানে সমাজবাদী পার্টি (এসপি), তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস), আম আদমি পার্টি (আপ), ডিএমকে, তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি), জনতা দল (সেকুলার)-সহ বেশ কয়েকটি দল ওই বৈঠকে আসে। দু’দিন ধরে চলা বৈঠক শেষে জানা যায়, শিরোমণি অকালি দল (এসএডি), এআইএডিএমকে, এসপি, টিআরএস— এই চারটি দল একসঙ্গে ভোট করানোর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে।
অন্য দিকে, তৃণমূল কংগ্রেস, আপ, ডিএমকে, টিডিপি, সিপিআই, সিপিআই(এম), ফরোয়ার্ড ব্লক, জেডি(এস) এবং বিজেপির শরিক দল গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টি এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে।এর ফলে এক সঙ্গে ভোট করানোর বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, আঞ্চলিক দলগুলি আইন কমিশনের বৈঠকে হাজির থাকলেও দুই জাতীয় দল বিজেপি এবং কংগ্রেস সেখান থেকে দূরেই ছিল।
আরও পড়ুন: ২০১৯-এ অনিশ্চিত বিজেপির দেড়শো!
এসপি-র পক্ষ থেকে রামগোপাল যাদব এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে ২০১৯-এই একসঙ্গে ভোট করানোর প্রক্রিয়া চালু করার পক্ষে সায় দিয়েছেন। যদি আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের সময়ে এই প্রক্রিয়া চালু হয়, তা হলে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকারের মেয়াদ কমে আসবে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়ে রাজ্যে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে এসপি।শিরোমণি অকালি দল যেমন জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া চালু হলে দলগুলির খরচ কমবে, নির্বাচনী আচরণবিধির মেয়াদ সংক্ষিপ্ত হবে। ফলে উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হবে না। এআইএডিএমকে-র তরফে লোকসভার ডেপুটি স্পিকার এম থাম্বিদুরাই জানান, এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করছেন তাঁরা। তবে বাস্তবায়িত করার আগে বেশি কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনাদরকার।
টিডিপি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জানিয়েছে, ভারতের মতো একটা বিশাল দেশে এই প্রক্রিয়া সংবিধানের সঙ্গে বেমানান এবং অবাস্তবও বটে! জেডি (এস)-এর পক্ষ থেকে জানিশ আলি যেমন কমিশনকে জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী নয়।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের পথ খোলা রেখেই বিজেপি-র সঙ্গে দর কষাকষি নীতীশের
সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগে বিরোধী দলগুলি বৈঠকে বসছে দিল্লিতে। ৩০ অগস্ট চেন্নাইয়ে রাজ্যের স্বায়ত্ত্বশাসন নিয়ে এক সম্মেলন ডেকেছে ডিএমকে। সেখানে রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সীতারাম ইয়েচুরি, শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব, মায়াবতী, ওমর আবদুল্লাদের একজোট করার চেষ্টা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিরোধীরা বুঝতে পারছেন, একসঙ্গে ভোট করানোর চাপ দিয়ে মোদী আসলে যত বেশি রাজ্যে সম্ভব বিধানসভা ভোট লোকসভার সঙ্গে করিয়ে নিতে চান। সে কারণে আইন কমিশনের বৈঠকে ডিএমকে-সহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক দল এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে।