বেঙ্গালুরুর স্টার্ট আপ সিইও সূচনা শেঠ। —ফাইল চিত্র।
চার বছরের সন্তানকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে বেঙ্গালুরুর স্টার্ট আপ সিইও সূচনা শেঠের বিরুদ্ধে। ছেলের দেহ সুটকেসে ভরে গোয়া থেকে বেঙ্গালুরু ফেরার পথে ধরা পড়েন তিনি। সোমবার রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত যত এগোচ্ছে, সূচনাকাণ্ডে ততই যেন জটিল হচ্ছে রহস্য।
সূচনার মৃত সন্তানের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। গলা টিপে নয়, মুখে বালিশ, তোয়ালে বা কাপড় চাপা দিয়ে খুন করা হয়েছে শিশুটিকে। ধস্তাধস্তির কোনও প্রমাণও পাওয়া যায়নি মৃত্যুর সময়। ময়নাতদন্তে রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে একটি প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠেছে। ধস্তাধস্তি ছাড়া, শ্বাসরোধ করেই যদি সন্তানকে হত্যা করে থাকেন মা, তবে ঘরে রক্তের দাগ এল কোথা থেকে?
বস্তুত, ওই রক্তের দাগই ধরিয়ে দিয়েছিল সূচনাকে। তিনি গোয়ার অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে বেরোনোর পরে সেখানকার কর্মীরা ঘরে গিয়ে রক্তের দাগ দেখতে পান। তাতেই তাঁদের সন্দেহ হয় এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়। কর্নাটকের চিত্রদুর্গ এলাকা থেকে গ্রেফতার হন ৩৯ বছরের সূচনা।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছেলেকে হত্যার পর নিজেও সূচনা আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কাটার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে ঘরে যে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে, তা তাঁরই রক্ত কি না, তা এখনও নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
সূচনা অবশ্য ছেলেকে খুনের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি জেরার মুখে পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি খুন করেননি। ঘুম থেকে উঠে ছেলেকে মৃত অবস্থায় পান মা। তার পর কী করবেন বুঝতে না পেরে সুটকেসে দেহ ভরে বেঙ্গালুরু ফেরার তোড়জোড় করেন।
গোয়া থেকে বেঙ্গালুরু ফেরার জন্য ৩০ হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করেছিলেন সূচনা। তাঁর স্বামী বেঙ্কট রমনের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। ওই মামলায় বেঙ্কটকে রবিবার করে সন্তানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। পুলিশের অনুমান, তাতে খুশি হতে পারেননি সূচনা। শিশুটিকে যে দিন খুন করা হয়, তার এক দিন পরেই বাবার সঙ্গে তার দেখা হওয়ার কথা ছিল। বাবার সঙ্গে দেখা করতে দেবেন না বলেই কি ছেলেকে হত্যা করেন মা? উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
সূচনার ঘর থেকে দু’টি কাফ সিরাপের খালি বোতলও পেয়েছে পুলিশ। ওই ওষুধ তিনি ছেলেকে খাইয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। ওষুধ খাইয়ে ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে খুন করা হয়েছে কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। তারা জানিয়েছে, সূচনা একেবারেই তদন্তে সহযোগিতা করছেন না।