শনিবার ত্রিপুরা ক্রিকেট সংস্থার দফতরে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এই যুবককে দেখা গিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
দুই গোষ্ঠীর গোলমালে ত্রিপুরার রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা ‘ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন’ বা টিসিএ-র দফতরের বাইরে পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হল। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শনিবার ত্রিপুরার রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার দখলদারি নিয়ে দু’পক্ষের গোলমাল বাধে। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পড়শি রাজ্যে।
রাজ্য ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা টিসিএ-র সহ-সভাপতি তিমির চন্দ এবং সম্পাদক তাপস ঘোষকে কয়েক জন যুবক শারীরিক হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের অভিযোগ, শনিবার ক্রিকেট সংস্থার দফতরে ঢোকার সময় তাঁদের নিগ্রহ করা হয়। তাঁদের আরও দাবি, ‘‘এক দল দুষ্কৃতী আমাদের টিসিএ-র দফতর থেকে বার করে দেন। সবটাই হয়েছে প্রাক্তন সভাপতি তপন লোধের অঙ্গুলিহেলনে।’’
শনিবার ত্রিপুরা ক্রিকেট সংস্থার দফতরে একদল যুবক ঢুকে পড়ে ভিতর থেকে দরজা আটকে দেন বলে অভিযোগ। সহ-সভাপতি তিমির এবং সম্পাদক তাপসকে তাঁরা ঢুকতে দেবেন না, এই দাবিতে দরজা বন্ধ করেন তাঁরা। এই নিয়েই শুরু হয় গন্ডগোল। একটি ভিডিয়োতে (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) দেখা যায়, সেই সময়ে কালো-সাদা ডোরাকাটা জামা পরা এক তরুণ কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র ঢোকাচ্ছেন। এই ঘটনা ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে ত্রিপুরায়।
এই ঘটনার পর শনিবার রাতে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাপস উল্লেখ করেছেন, ‘‘আইন মেনে গত ১৯ জুলাই ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদ থেকে তপন লোধকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ফলে তপন আর টিসিএ-র সভাপতি নন।’’ যদিও এই দাবি উড়িয়েছেন তপন। তাঁর দাবি, আইন মোতাবেন তাঁকে সরানো যাবে না। যে দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে সরগরম টিসিএ, তার একটি তপনের এবং অন্যটি তাপসের বলে দাবি।
তাপস দাবি করেছেন, টিসিএ দফতরের তালা ভেঙেছেন তপনের গোষ্ঠী। পাল্টা অনিয়মের অভিযোগ জানিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের দাবিতে ত্রিপুরার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি লিখেছেন তপন। টিসিএ-তে যা হয়েছে, তা সবিস্তারে বিসিসিআই-কে জানানো হবে, এ কথা জানিয়েছেন তপন।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ঘটনার কথা জানতেন না ত্রিপুরার ক্রীড়ামন্ত্রী টিঙ্কু রায়। তিনি আপাতত দিল্লিতে রয়েছেন। সেখানেই থেকে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছ থেকে ওই ঘটনা সম্পর্কে প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের থেকেই বিষয়টা প্রথম জানলাম। আমি গত দু’তিন দিন ধরে দিল্লিতে আছি।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘টিসিএ স্বতন্ত্র সংস্থা। এর সঙ্গে রাজ্য সরকারের ক্রীড়া দফতরের কোনও যোগ নেই।’’ ত্রিপুরা ক্রিকেট দলের প্রাক্তন সদস্য মণিময় রায় জানিয়েছেন, অতীতে অনেক ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করেছে টিসিএ। কিন্তু, যে ভাবে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ প্রকাশ্যে এল, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।