এক শহর থেকে আর এক শহরে উড়ে যাওয়া,নামী হোটেলে থাকা আর গরিবদের ভিতরে অর্থ বিলিয়ে নাম কামানো। ঠিক যেন বাস্তবের রবীন হুড!দিব্যি চলছিল। কাল হল বৃন্দাবনে গরিবদের জন্য এলাহিআয়োজন করতে গিয়ে। এলাহি খাওয়া তা-ও আবার সঙ্গে আগত সকল অতিথিদের হাতে উপহার হিসাবে ২ হাজার টাকার নোট!
এত টাকা এল কী ভাবে? সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। খবর পৌঁছয় পুলিশের কানেও। ব্যস, খোঁজ শুরু পুলিশের। জানা গেল কোনও সহৃদয় কোটিপতি তিনি নন, উল্টে একজন চোর! মালিকের টাকা চুরি করেই বিলাসিতায় গা ভাসিয়েছেন তিনি। হোটেলের বিলাসবহুল ঘর থেকে তার ঠাঁই এখন শ্রীঘর। সোমবারই বৃন্দাবন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ওই ব্যক্তির নাম রমেশ রাওয়াত। গুজরাতের পাটান জেলার বাসিন্দা তিনি। মুম্বইয়ে প্রফুল্ল পটেলের একটি ক্যুরিয়র কোম্পানিতে কাজ করতেন রমেশ। মালিক প্রফুল্ল পটেলেরই ৮০ লক্ষ টাকা চুরি করে চম্পট দেন। আর তার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর খোঁজ করছিল মুম্বই পুলিশ। পুলিশ থেকে বাঁচতে এক শহর থেকে অন্য শহরে পালিয়ে পালিয়েই বেড়াতেন রমেশ। মোবাইলের সিম বদলে ফেলতেন। এভাবে কলকাতাতেও এক সময় কাটিয়ে যান বেশ কিছু দিন। সেখান থেকে চলে যান বেঙ্গালুরুতে। শেষে ২০ দিন আগে বৃন্দাবনে গিয়ে দান-ধ্যান শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কেন খুন হলেন এই ‘মিসেস ইন্ডিয়া আর্থ’ ফাইনালিস্ট?
পুলিশ জানায়, তিনি বৃন্দাবনের গরিব-দুঃখীদের ২ হাজার টাকা করে ভিক্ষা দেন। ৮ লক্ষ টাকা খরচ করে গরিবভোজনের এলাহি ব্যবস্থা করেন বৃন্দাবনে। তা ছাড়া আরও ৮ লক্ষ টাকা দান করেন গরিবদের আর আগত অতিথিদের প্রত্যেককে উপহার হিসাবে ২ হাজার টাকার নোট দেন। শুধু তাই নয়, হনুমান মন্দির সংস্কারের জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন এবং বৃন্দাবনে আসা ভক্তরা যাতে বিনামূল্যে যমুনা নদীতে স্টিমার চড়তে পারেন তার জন্য সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা অনুদানও দেন।
এতেই শহর জুড়ে চর্চা শুরু হয়ে যায় তাঁকে ঘিরে।প্রাথমিক সন্দেহে খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে বিষয়টা। বৃন্দাবন পুলিশের সহায়তায় মুম্বই পুলিশ তাঁকেগ্রেফতার করেছে।তাঁর কাছ থেকে ১০ লাখ ৬৮ হাজার নগদ টাকা, ১১৮ গ্রাম সোনার গয়না এবং ৫টি আইফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।