ধর্মঘট: জিএসটি চালুর প্রতিবাদে ডাকা ধর্মঘটের ফলে বন্ধ রয়েছে চেন্নাইয়ের সিনেমা হল। সোমবার। ছবি: এএফপি
নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতেই জিএসটি-র বিরুদ্ধে আন্দোলনের সুর চড়ছে। কিন্তু কড়া অবস্থান নিয়ে কেন্দ্র আজ জানিয়ে দিয়েছে, এই আন্দোলনের সামনে মাথা নোয়াবে না সরকার। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির যুক্তি, ‘‘কেউ এ কথা বলতে পারে না যে কর না দেওয়াটাই আমার মৌলিক অধিকার।’’
গুজরাতের আমদাবাদ-সুরাতের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছেন। আজ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন সুরাতের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। পুলিশবাহিনীকে নিশানা করে পাথর ছুড়েছে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ উড়িয়ে জেটলির বক্তব্য, জিএসটি মেটানো নিয়ে ব্যবসায়ীদের সমস্যা নেই। আসল সমস্যা হল, জিএসটি-র আওতায় এলে তাঁদের পুরো ব্যবসার পরিমাণ সরকারের জানা হয়ে যাবে। তখন তাঁদের পক্ষে আয়কর মেটানো ছাড়া উপায় থাকবে না।
এত দিন জামাকাপড়ের উপর কর চাপানো হতো না। তার বদলে নতুন জিএসটি ব্যবস্থায় জামাকাপড়ে ৫ শতাংশ কর চাপানো হয়েছে। গোটা দেশের মতো আমদাবাদেও এর প্রতিবাদে তিন দিনের ধর্মঘট হয়েছিল। তার পরে ফের গুজরাতের ব্যবসায়ীরা জিএসটি সংঘর্ষ সমিতি তৈরি করে ১ জুলাই থেকে রাজ্যে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘটে নেমেছেন। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, চলতি বছরের শেষে গুজরাতে বিধানসভা ভোট। সেই সুযোগ নিয়েই চাপ বাড়াতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: আডবাণীকে ‘ভারতরত্ন’ দিতে তৎপর মোদী সরকার
আজ এক সাক্ষাৎকারে জেটলি যুক্তি দিয়েছেন, জামাকাপড়ের উপর যে কর বসছে, তার অনেকটাই কাঁচামালের উপর মেটানো কর হিসেবে ফেরত মিলবে। তার পরেও যদি জামাকাপড়ের উপর কিছু কর চাপে, তা হলে যিনি কিনছেন, তিনি কর মেটাবেন। ব্যবসায়ীদের লাভের অঙ্ক থেকে কর দিতে হবে না।
তা হলে প্রতিবাদ কীসের? জেটলির যুক্তি, প্রতিবাদের কারণ হল, একবার কর ব্যবস্থার মধ্যে এলে ব্যবসার পরিমাণের খতিয়ানও দিতে হবে। তার পরে জিএসটি-র বোঝা না চাপলেও আয়করের বোঝা চাপবে। তখন আর ব্যবসায় কর মেটাই না, আয়করও মেটাই না— সেই ব্যবস্থা চলবে না। আয়কর দিতেই হবে। তাই ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদে নেমে একটা সুযোগ নিচ্ছেন। কিন্তু এই সরকার চাপের মুখে মাথা নোয়াবে না।
সুরাতের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পলিয়েস্টার, রেয়ন ও সিন্থেটিক সুতোর উপর ১৮ শতাংশ কর চেপেছে। এই সব কাঁচামাল থেকেই সুরাতে শাড়ি হয়। কিন্তু জিএসটির বোঝা নিয়ে সরকার তাঁদের দাবি শুনছে না। আজ রাস্তায় নেমে ব্যবসায়ীরা স্লোগান দেন, ‘জিএসটি হঠাও, সরল ট্যাক্স লাও’। এ দিকে, আজ দিল্লিতে ক্যাবিনেট সচিব বি কে সিন্হা জিএসটি রূপায়ণের বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যাতে বেড়ে না যায় এবং জিনিসপত্রের ঘাটতি না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। জিএসটি নিয়ে ‘অপপ্রচার’-এর জবাব দিতেও বলা হয়েছে তাদের।