রিলায়্যান্সের মালিক মুকেশ অম্বানী। ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। অম্বানী পরিবারও ভারতের সবচেয়ে ধনী পরিবার। শুধু ভারতই বা কেন, বিশ্বের প্রথম ১০ ধনী পরিবারের তালিকায় নাম রয়েছে অম্বানীদের।
এই পরিবারের ছেলেমেয়েরা যে মিতব্যয়িতায় দিন কাটাবেন না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে? জন্ম থেকেই এঁদের দেখভালও নিশ্চয় তেমনই হবে। অথচ মুকেশ এবং নীতা অম্বানী স্কুলে পড়ার সময় তাঁদের ছেলেমেয়েদের কত টাকা পকেটমানি দিতেন জানেন? জানতে অবাক হবেন।
১৯৮৫ সালে ভারতের সবচেয়ে ধনী পরিবারে বিয়ে হয় নীতা অম্বানীর। বিয়ের ঠিক এক বছর পর নীতা অম্বানী জানতে পেরেছিলেন তাঁর কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে। যার জন্য তিনি স্বাভাবিক ভাবে মা হতে পারবেন না।
অম্বানী পরিবারের পুত্রবধূ হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে বরাবরই মধ্যবিত্ত মনে করেন নীতা অম্বানী। ছোট থেকেই তাঁর স্বপ্ন ছিল শিক্ষিকা হওয়ার। নিজের সেই স্বপ্নও পূর্ণ করেছেন নীতা।
ধীরুভাই অম্বানী ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দায়িত্ব নিয়েই থেমে থাকেননি। আইপিএল টিম, ব্যবসা এবং সংসার, একসঙ্গে সবটাই সুন্দর ভাবে সামলাচ্ছেন তিনি। নিজে বাবা-মার কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়ে বড় হয়েছেন, ছেলে মেয়েদের মধ্যেও সেই সংস্কার চারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
নীতা অম্বানী মু্ম্বইয়ে এক একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছেন। তাঁরা দুই বোন এবং ১০ জন খুড়তুতো ভাইবোন মিলেমিশে বেড়ে উঠেছেন। বড় সংসার কী ভাবে সামলাতে হয় বাবা-মায়ের কাছে সেই ছোট থেকেই শিখেছিলেন তিনি। তাঁরা ছোটবেলায় পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতেন।
ছেলেমেয়েদেরও তিনি অনেকটা সে ভাবেই বড় করে তুলেছেন। অনেক চেষ্টার পর বিয়ের প্রায় সাত বছর পর মুকেশ-নীতার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। যমজ সন্তান হয়েছিল তাঁদের। ১৯৯১ সালে ঈশা এবং আকাশের জন্ম দেন নীতা।
ঈশা এবং আকাশের জন্মের কয়েক বছর পর, ১৯৯৫ সালে অম্বানী পরিবারের ছোট ছেলে অনন্ত অম্বানীর জন্ম হয়।
জানলে অবাক হবেন, নীতা অম্বানী তাঁর তিন সন্তানকেই স্কুলে পড়ার সময় মাত্র পাঁচ টাকা পকেটমানি দিতেন!
এই নিয়ে অনেক সময়ই সহপাঠীদের কাছে হাসির খোরাকও হতে হয়েছে তাঁদের। ক্যান্টিনে কিছু কেনার সময় পকেট থেকে ৫ টাকা বার করলেই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সহপাঠীরা হাসাহাসি করত সে সময়।
অম্বানীর ছেলেমেয়ে নাকি ভিখারির! এরকম কথাও নাকি শুনতে হয়েছে তাঁদের। একবার ছোট ছেলে অনন্ত নাকি বাড়ি ফিরে মায়ের থেকে ৫ টাকা পকেটমানি নিতে অস্বীকার করেছিলেন। বদলে ১০ টাকা পকেটমানি দাবি করেছিলেন, এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন নীতা অম্বানী।
তবে এ সব নিয়ে কখনও মাথা ঘামাননি নীতা বা মুকেশ অম্বানী। বরং সবসময়ই অর্থের অপচয় না করার শিক্ষাই তাঁরা সন্তানদের দিয়েছেন।