নরেন্দ্র মোদী।
নীরব-কেলেঙ্কারির দায় শেষ পর্যন্ত ঝেড়েই ফেলল নরেন্দ্র মোদী সরকার!
ত্রিপুরায় সদ্য জিতেছে দল। তারই রেশ ধরে সোমবার বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিন হইহই করে সংসদে ঢুকল নরেন্দ্র মোদী-বাহিনী। কিন্তু এককাট্টা বিরোধীরা নীরব মোদী নিয়ে সংসদে একযোগে আক্রমণে নামল। রাফাল নিয়ে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাল যুব কংগ্রেস। পরিস্থিতির মোড় ঘোরাতে নীরব-কেলেঙ্কারির পুরো দায় মনমোহন সিংহ সরকারের ঘাড়ে ঠেলে দিল বিজেপি। মনমোহন-পি চিদম্বরমকে কাঠগড়ায় তুলে রাহুল গাঁধীর জবাবদিহি চাইল।
বিজেপির অভিযোগ, ২০১২ সালে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম শুরু করেছিলেন ৮০:২০ প্রকল্প। যার মাধ্যমে বেসরকারি ক্ষেত্রকে সোনা আমদানি করে ২০ শতাংশ রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বিজেপির দাবি, নির্বাচনী আচরণবিধি থাকা সত্ত্বেও ২০১৪-র ১৬ মে, ভোটের ফলপ্রকাশের দিন নীরব মোদীর মামা তথা পিএনবি কাণ্ডে অভিযুক্ত মেহুল চোক্সীর গীতাঞ্জলী-সহ কয়েকটি শিল্পসংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেন পি চিদম্বরম। ২১ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমতিও মেলে। ক্ষমতায় এসে সেই বছরের নভেম্বরে মোদী সরকার বাতিল করে প্রকল্পটি। আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘গোটা দুর্নীতি হয়েছে মনমোহন জমানায়।’’
শুধু অভিযোগ তোলা নয়, সিএজি রিপোর্টের ভিত্তিতে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে একটি সাব-কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যার প্রধান বিজেপিরই সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। সেখানেও পি চিদম্বরমের আমলে এই প্রকল্পের ‘গরমিল’ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সেখানেও অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের তলব করে রাজকোষে কত লোকসান হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিজেপির এক নেতার দাবি, চিদম্বরমের এই ‘দুর্নীতি’র ফলে ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ক্ষতির প্রসঙ্গে রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সংসদে জানান, এই জমানায় অনুৎপাদক সম্পদ হয়নি। মনমোহন জমানায় তার আসল পরিমাণ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।’’ এ দিনই রেটিং সংস্থা এস এন্ড পি জানিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংস্কার কতটা প্রয়োজনীয়, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক পিএনবি কেলেঙ্কারি। প্রয়োজনীয় মূলধনের জোগান এবং কঠোরতর নিয়ন্ত্রণ ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য ফেরাবে বলেও জানায় তারা।
কংগ্রেসকে দুষে রবিশঙ্কর দাবি করেন, রাফাল, এফআরডিআই বিল, নোটবাতিল, জিএসটির মতো বিষয় নিয়ে কংগ্রেস মিথ্যাচার করছে। যতীন মেটা নামে এক শিল্পপতিকে মোদী সরকার পালাতে সাহায্য করেছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে রবিশঙ্করের দাবি, ওই শিল্পপতি দেশ ছেড়েছেন ২০১২ সালে।
কংগ্রেসের বক্তব্য, ত্রিপুরা জয় নিয়ে হইচই করে বিজেপি নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে চাইছে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, ‘মামা-ভাগ্নে’ কী করে ব্যাঙ্ক লুঠ করে পালাল, সেটা বিজেপি বলছে না কেন? বিজয় মাল্য-ললিত মোদীকে পালাতে সাহায্য করার পান্ডাই বে কে, সে প্রশ্নও তুলেছে কংগ্রেস।