তুষার মেটা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদের বিলুপ্তি নিয়ে সোমবার রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, অনুচ্ছেদ ৩৭০-এ জম্মু ও কাশ্মীরকে যে বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছিল, তা সাময়িক। কাশ্মীরের গণপরিষদ বাতিল হয়ে যাওয়ার পরেও রাষ্ট্রপতির ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করার অধিকার ছিল। ফলে যা হয়েছে, তা অসাংবিধানিক নয়। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় এবং পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের জয় হিসাবে দেখছেন কেউ কেউ। আইনি এই সাফল্যের জন্য অবশ্য প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা।
সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পরেই তাঁর তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে তিনি বলেন, “এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে সম্ভবপর করে তুলেছে সম্মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর লৌহকঠিন ইচ্ছা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহের দুর্দান্ত কৌশল। গোটা দেশ তাঁদের কাছে ঋণী থাকবে।” এর পাশাপাশি মেটা বলেন, “২০১৯ সালের ৫ অগস্ট ভারতের ইতিহাসে এমন একটি দিন, যে দিন হিমালয়ের ঐতিহাসিক ভুলকে সংশোধন করে নিয়েছিল সরকার।”
সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পরেই তাঁর তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে তিনি বলেন, “এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে সম্ভবপর করে তুলেছে সম্মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর লৌহকঠিন ইচ্ছা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহের দুর্দান্ত কৌশল। গোটা দেশ তাঁদের কাছে ঋণী থাকবে।” এর পাশাপাশি মেটা বলেন, “২০১৯ সালের ৫ অগস্ট ভারতের ইতিহাসে এমন একটি দিন, যে দিন হিমালয়ের ঐতিহাসিক ভুলকে সংশোধন করে নিয়েছিল সরকার।”
প্রসঙ্গত, সলিসিটর জেনারেল হিসাবে এই সংক্রান্ত মামলায় কেন্দ্রের তরফে সওয়াল করেছিলেন মেটা-ই। তাই তাঁকে এই আইনি যুদ্ধের সেনাপতি বললে অত্যুক্তি হয় না বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি যাবতীয় কৃতিত্ব দিচ্ছেন মোদী-শাহকেই। গোড়ার দিন থেকে তিনি যে এই মামলায় যুক্ত ছিলেন, সে কথাও জানাতে ভোলেননি মেটা। তাঁর কথায়, “আমি ভাগ্যবান যে, গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরেছিলাম। সাংবিধানিক বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতির পান্ডিত্যের প্রশংসাও শোনা যায় মেটার কণ্ঠে।
অনুচ্ছেদ ৩৭০ একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা, সোমবার রায় ঘোষণা করতে বসে এমনটাই মন্তব্য করে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। আদালত জানায়, ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব নেই। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, যে হেতু সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদান করা হয়েছিল এবং তা অস্থায়ী, তাই রাষ্ট্রপতির তা বাতিল করার অধিকার সম্পূর্ণ বৈধ। জম্মু ও কাশ্মীরের গণপরিষদ বাতিল করার পরেও রাষ্ট্রপতি এটি করতে পারেন। এর পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দিতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ, আর তা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে পড়বে না। রাজ্যের মর্যাদা দিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে ৩৭০ রদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ২০১৯ সালে কেন্দ্র সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করে। সাবেক জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখে ভাগ করা হয়। তার পরেই সুপ্রিম কোর্টে এই পদক্ষেপের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়। আবেদনকারীদের পক্ষে কপিল সিব্বল, গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের মতো প্রবীণ আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি করা বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক নির্দেশের মাধ্যমে একটি পূর্ণ মর্যাদার অঙ্গরাজ্যকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করেছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরে আঘাত। সংবিধানের সঙ্গেও ধোঁকাবাজি করা হয়েছে।