শিল্পীর চোখে নতুন সংসদ ভবন। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় ৫৬০ ফুট ব্যাসের বৃত্তাকার সংসদ ভবন থেকে যাবে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে। তার পাশেই নতুন ত্রিভুজাকৃতি সংসদ ভবন তৈরি হবে প্রায় ৬৪,৫০০ বর্গমিটার জায়গার উপরে। খরচ হবে ৯৭১ কোটি টাকা।
আগামী ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস ও ভূমিপূজা করবেন। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে গিয়ে তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শিলান্যাস অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। লোকসভার স্পিকারই সংসদ ভবনের তত্ত্বাবধায়ক। গণতন্ত্রের নতুন ‘মন্দির’-এর ‘ভূমিপূজা’-র জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফিরে বিড়লা বলেন, ‘‘স্থির হয়েছে, ১০ ডিসেম্বর দুপুর একটায় শিলান্যাস হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভূমিপূজার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হবে। ২০২২-এ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে আমরা নতুন সংসদ ভবনে লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু করব।”
অতিমারির মোকাবিলা, অর্থনীতির সঙ্কটের মধ্যে এখন কেন নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে টাকা ঢালা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে সনিয়া গাঁধী-সহ বিরোধী শিবিরের একাধিক নেতানেত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁদের তির ছিল মোদী সরকারের অগ্রাধিকারের দিকে। বিড়লা বলেন, নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে সরাসরি ২০০০ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পরোক্ষ ভাবে ৯০০০ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বর্তমান সংসদ ভবন যে ব্রিটিশ জমানায় তৈরি হয়েছিল, তা মনে করিয়ে দিয়ে স্পিকার বলেন, ‘‘দেশের মানুষের জন্য গর্বের বিষয় হল, এই সংসদ ভবন দেশের মানুষের হাতেই তৈরি হবে। আত্মনির্ভর ভারতের প্রধান উদাহরণ হবে।”
বিজেপি সূত্রের খবর, ১৫ ডিসেম্বর থেকে হিন্দু পঞ্চাঙ্গ অনুযায়ী ‘খরমাস’ শুরু হয়ে যাচ্ছে। এই সময় কোনও শুভকাজ করতে নেই। ‘খরমাস’ শেষ হবে নতুন বছরের ১৫ জানুয়ারি, মকর সংক্রান্তির সময়। সেই কারণেই ১০ ডিসেম্বর দিনটিকে শিলান্যাসের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। স্পিকার জানিয়েছেন, কোভিডের বিধিনিষেধ মেনেই অনুষ্ঠান হবে। সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। অনেকে সশরীরে হাজির হবেন। অনেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেবেন।
আরও পড়ুন: আন্দোলনের কামড়ে বিপদ দেখছে বিজেপি
টাটা প্রজেক্টস ও কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতর ইতিমধ্যেই নতুন সংসদ ভবনের কাজ শুরুর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। বর্তমান সংসদ ভবনের সামনে যে অংশে কাজ হবে, সেই এলাকাটি ঢেকে ফেলা হচ্ছে। শব্দ ও বায়ুদূষণ যথা সম্ভব কম রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা। স্পিকার জানান, নতুন ভবনে লোকসভায় ৮৮৮ জনের বসার ব্যবস্থা হবে। রাজ্যসভায় ৩৮৪ জন বসতে পারবেন। এখন লোকসভায় ৫৪৩ জন ও ও রাজ্যসভায় ২৪৫ জন সাংসদ রয়েছেন। জনসংখ্যার অনুপাতে ভবিষ্যতে সাংসদ সংখ্যাও বাড়াতে হবে বলে এই ব্যবস্থা। নতুন ভবনে কনস্টিটিউশন হল থাকবে। বর্তমানে শ্রম মন্ত্রক, জলশক্তি মন্ত্রকের ঠিকানা শ্রমশক্তি ভবন। তা ভেঙে সাংসদদের দফতর তৈরি হবে।