ফাইল চিত্র।
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসতে চলেছে চতুর্দেশীয় অক্ষ বা ‘কোয়াড’ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই বৈঠকের আয়োজন করেছেন। কোয়াড গঠন হওয়ার পর থেকে ভার্চুয়াল বৈঠক হচ্ছিল সদস্য দেশগুলির মধ্যে। এ বার রাষ্ট্রপ্রধানেরা সরাসরি সাক্ষাৎ করবেন।
কোয়াড গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকা। সেই বৈঠকেই এ বার সরাসরি হাজির হবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি সূত্র মারফৎ এমনই জানানো হয়েছে। বৈঠকে হাজির থাকবেন অস্ট্রেলয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, জাপান প্রধনমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হল ভার্চুয়াল বৈঠকে যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার অগ্রগতি সামনাসামনি উপস্থিত পর্যালোচনা এবং পরবর্তী লক্ষ্য স্থির করা।” ২৪ সেপ্টেম্বর কোয়াড শীর্ষ বৈঠকের পরের দিন অর্থাৎ ২৫ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখবেন মোদী। সেখানে বর্তমান আফাগনিস্তানের পরিস্থিতি এবং তালিবানের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি যে ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং তার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি বিশেষ করে ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে যে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরতে পারেন মোদী।
গত মার্চে প্রথম কোয়াড শীর্ষ বৈঠকের ভার্চুয়াল আয়োজন করেছিলেন বাইডেন। সেই বৈঠকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছিল। তার মধ্যে যেমন ছিল কোভিড নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের প্রভাব বিস্তারের মতো বিষয়গুলি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, “আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে কোয়াড শীর্ষ বৈঠক হতে চালেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তিন রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।”
হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, এই বৈঠকে সদস্য দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করা, কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা, পরিবেশ, সাইবার নিরাপত্তা, প্রযুক্তি এবং ভারত-প্রশান্ত মহসাগরীয় অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দীর্ঘ দিন ধরেই চিনের আগ্রাসী নীতির বিরোধিতা করে আসছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত। যে ভাবে ওই অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে চিন, তাতে বাকি দেশগুলির বাণিজ্যনীতি প্রভাবিত হচ্ছে। এমনকি চিনের এই তৎপরতায় ওই অঞ্চলের দেশগুলির নিরাপত্তা নিয়েও একটা শঙ্কার মেঘ তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ চিন সাগরের প্রায় ১৩ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিজেদের বলে দাবি করেছে চিন। শুধু তাই নয়, ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামে সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সেনাঘাঁটি তৈরি করছে চিন। যা খুবই উদ্বেগজনক বলে মনে করছে কোয়াড গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি। এই সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই ২০১৭-য় গড়ে তোলা হয় কোয়াড।