Cheetah

মোদী এ বার জন্মদিনে মধ্যপ্রদেশের জঙ্গলে ছাড়বেন আফ্রিকার চিতা! জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি

কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, দক্ষিণ আফ্রিকা অথবা নামিবিয়া থেকে আগামী পাঁচ বছর ধরে ধাপে ধাপে ৫০টি চিতা ভারতে আনা হবে। এদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ অল্পবয়স্ক চিতা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভোপাল শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:১৬
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

গত বার হয়েছিল ‘সেবা ও সমর্পণ অভিযান’। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জন্মদিন পালন করবেন মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যানে আফ্রিকা থেকে আনা পাঁচটি চিতা ছেড়ে। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন।

Advertisement

শিবরাজ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘নামিবিয়ার রাজধানী উইন্ডহোক থেকে প্রাথমিক ভাবে পাঁচটি চিতা রাজস্থানের জয়পুরে আনা হচ্ছে। সেখান থেকে চিতাগুলিকে সড়কপথে পালপুরে আনা হবে। ১৭ সেপ্টেম্বর সেগুলি মুক্ত প্রকৃতিতে ছাড়ার কর্মসূচি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ওই কর্মসূচিতে হাজির থাকবেন বলে আমাদের কাছে বার্তা এসেছে। ওই কর্মসূচি ঘিরে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।’’

কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, দক্ষিণ আফ্রিকা অথবা নামিবিয়া থেকে আগামী পাঁচ বছর ধরে ধাপে ধাপে ৫০টি চিতা ভারতে আনা হবে। এদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ অল্পবয়স্ক চিতা। যাতে তাদের থেকে ভারতে চিতার পর্যাপ্ত বংশবৃদ্ধি ঘটে, সে জন্যই তাদের আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বন ও পরিবেশ মন্ত্রক নিযুক্ত বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি নামিবিয়া গিয়ে প্রথম পর্বের চিতা বাছাইয়ের কাজ শেষ করে ফেলেছে। সই হয়েছে এ সংক্রান্ত ‘মউ’ও। মধ্যপ্রদেশ বন দফতর সূত্রের খবর, প্রথমেই সরাসরি জঙ্গলে না ছেড়ে তারের বেড়ায় ঘেরা মুক্ত প্রান্তরে ছাড়া হবে পাঁচটি চিতাকে। যাতে তারা পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, সেই উদ্দেশ্যেই এই ব্যবস্থা।

Advertisement

১৯৪৭ সালে সরগুজার (বর্তমান ছত্তীসগঢ় রাজ্যে অবস্থিত) রামানুজ প্রসাদ সিংহদেওর গুলিতে মারা পড়েছিল ভারতের শেষ তিনটি চিতা। তার পাঁচ বছর পর ১৯৫২ সালে ভারতে চিতা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে বলে ঘোষণা করে তদানীন্তন কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সময় থেকে গত সাত ধরে চিতা ছিল না এ দেশে। মোদী সরকারের দাবি, ভারতের অরণ্যে লুপ্ত হয়ে যাওয়া সেই চিতা ফেরানোর উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ।

যদিও কেন্দ্রের সেই দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ভারতে চিতা আসছে বটে, কিন্তু ‘ফিরে আসছে’ কি? কারণ, প্রাচীন যুগ থেকেই পঞ্জাব, রাজপুতানা, উত্তর ভারত, মধ্যভারত, দাক্ষিণাত্য এবং ওড়িশায় যে চিতার বসতি ছিল, তা এশীয় উপপ্রজাতির (বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘অ্যাসিনোনিক্স জুবেটাস ভ্যানাটিকাস’)। কিন্তু মোদী সরকার যে চিতা আনতে চলছে, তা আফ্রিকার উপপ্রজাতি (বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘অ্যাসিনোনিক্স জুবেটাস জুবেটাস’)। পৃথিবীতে এশীয় চিতাদের এক মাত্র প্রাকৃতিক আবাস এখন ইরান। ‘পার্সিয়ান ওয়াইল্ডলাইফ হেরিটেজ ফাউন্ডেশন’ এবং ‘ইরানিয়ান চিতা সোসাইটি’-র সমীক্ষায় দাবি, সে দেশের তুরান সংরক্ষিত অঞ্চল-সহ কিছু এলাকায় এখনও কিছু এশীয় চিতা টিকে রয়েছে।

মনমোহন সিংহের সরকারের আমলে ২০০৯ সালে ইরান থেকে এশীয় চিতা আনার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। এ বিষয়ে তেহরানের প্রাথমিক সম্মতিও মিলেছিল। তবে এশীয় চিতার বিনিময়ে ভারত থেকে এশীয় সিংহ চেয়েছিল ইরান। একদা ভারতের মতো ইরানও ছিল এশীয় সিংহের প্রাকৃতিক বাসভূমি। কিন্তু পরে সেখান থেকে বিলুপ্ত হয় তারা। গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সে সময় গির জাতীয় উদ্যান থেকে সিংহ ভিন্‌দেশ এমনকি, ভিন্‌রাজ্যেও পাঠাতে সম্মত হয়নি। ফলে বাতিল হয়ে যায় সেই পরিকল্পনা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement