প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
এক দিকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দল বিজেপি। অন্য দিকে সিপিএম। যুব প্রজন্মের কাছাকাছি পৌঁছতে লোকসভা ভোটের এক বছর আগে শুরু হয়ে গেল সম্মুখ সমর!
দু’দিনের কেরল সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বাম-শাসিত এই রাজ্যে গিয়ে আজ, সোমবার প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত হওয়ার কথা ‘যুবম ২৩ শীর্ষক একটি সম্মেলনে। কোচির সেক্রেড হার্ট কলেজ চত্বরে লেকভিউ মাঠে ওই সম্মেলনে যুব প্রজন্মের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আদানপ্রদানের আসরে মিলিত হওয়ার কথা মোদীর। একই সময়ে দলের যুব সংগঠনকে সামনে রেখে পাল্টা ‘ইয়ং ইন্ডিয়া আস্ক দ্য প্রাইম মিনিস্টার’ শীর্ষক সম্মেলন করছে সিপিএম। কোচি (মূলত এর্নাকুলম)-সহ রাজ্যের সব জেলা সদরে ওই সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর জন্য ১০০টি প্রশ্ন তুলে আনার কর্মসূচি নিয়েছে তারা।
কোচিতে নতুন ‘ওয়াটার মেট্রো’, তিরুঅনন্তপুরম থেকে কেরলের প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধনের মতো এ বার বেশ কিছু প্রকল্পের সূচনা করার কথা প্রধানমন্ত্রীর। সেই সব কর্মসূচিই কাল, মঙ্গলবার। তার আগে আজ, সোমবার কোচিতে মোদীর নজরে তরুণ প্রজন্মের ভোটারেরা। কোচি শহরে সেক্রেড হার্ট কলেজ পর্যন্ত আজ রোড-শো করার কথা তাঁর। ভেন্ডুরুতি ব্রিজ থেকে তেভারায় সেক্রেড হার্ট কলেজ পর্যন্ত ১.৮ কিলোমিটার পথে মোদীর জন্য আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। ‘যুবম ২৩’ সম্মেলন হবে ‘ভাইব্র্যান্ট ইয়ুথ ফর মডিফায়িং কেরালা’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে। তবে তার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপিই। মোদীর রোড-শো’র সময়ে রাস্তার ধারে এবং ওই যুব সম্মেলনে লোকজনের ব্যবস্থা করার মূল দায়িত্ব বিজেপিরই। শিল্প, সংস্কৃতি, ছায়াছবি, ক্রীড়ার মতো নানা ক্ষেত্র থেকে বিশিষ্ট জনেদেরও আমন্ত্রণ করা হয়েছে যুব সম্মেলনে।
কেরল বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রনের কথায়, ‘‘যুব প্রজন্মের প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনবেন। নিজেদের ভাবনার কথা প্রধানমন্ত্রীকে তাঁরা জানাতেও পারবেন। আগে থেকে নাম নথিভুক্ত করেই তবে সম্মেলনে ঢোকা যাবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নতুন ভারত যে উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে, সেটাই হবে আলোচনার মুখ্য বিষয়।’’ নিয়ম মেনে প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে পুলিশ-কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে বিজেপি নেতাদের। গরমের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত ভিড় যাতে না হয়, বিজেপি নেতাদের তা দেখার অনুরোধ করেছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
মোদী রাজ্যে পৌঁছনোর আগেই কোল্লম সৈকতে ডিওয়াইএফআইয়ের যুব সম্মেলনের সূচনা করে দিয়েছেন সিপিএমের কেরল রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন। ডিওয়াইএফআই নেতৃত্বের দাবি, জেলায় জেলায় মোট ২৫ হাজার প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার লক্ষ্যে এই সম্মেলনে যুক্ত হবেন। গোবিন্দন বলেছেন, ‘‘দেশের মানুষের সামনে আজ অনেক প্রশ্ন। কর্মসংস্থানের আকাল, বেসরকারিকরণ, দেশের সম্পদ বিক্রি বা জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, একের পর এক সমস্যায় ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল পুলওয়ামার ঘটনা নিয়ে যা দাবি করেছেন, সেই সম্পর্কেই বা প্রধানমন্ত্রীর জবাব কী? আমরা চ্যালেঞ্জ করছি, প্রধানমন্ত্রী মানুষের প্রশ্নের জবাব দিন!’’ সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘সাজানো অনুষ্ঠান’ করে মোদী যতই নজর ঘোরানোর চেষ্টা করুন, দেশ জুড়েই প্রকৃত প্রশ্ন নিয়ে তাঁরা পথে থাকবেন।