প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল। তার পরেই এই ঘটনাকে ‘এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত’ বলে বর্ণনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমস্টেক সম্মেলনে যোগ দিতে এখন তাইল্যান্ডে রয়েছেন তিনি। শুক্রবার সকালে সেখান থেকেই সমাজমাধ্যমে ওয়াকফ বিল নিয়ে পোস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী। ওয়াকফ বিল নিয়ে মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানান সকল সাংসদ এবং দেশের অগণিত মানুষকে।
সমাজমাধ্যমে মোদী লেখেন, “সংসদের দুই কক্ষে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার ঘটনা আর্থ-সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা, সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত।” প্রধানমন্ত্রী জানান, এত দিন যাঁরা প্রান্তিক এবং বঞ্চিত ছিলেন, ওয়াকফ সংক্রান্ত নতুন আইন তাঁদের সাহায্য করবে।
বিলটি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটিকে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেওয়ার জন্য সাংসদ এবং সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে মোদী লেখেন, “বিস্তারিত আলোচনা এবং বিতর্কের প্রয়োজনীয়তা আরও এক বার প্রমাণিত হল।” ওয়াকফ ব্যবস্থার ‘ত্রুটি’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “বহু দশক ধরে ওয়াকফ ব্যবস্থা আর স্বচ্ছতার অভাব কার্যত সমার্থক ছিল। এই কারণে মুসলমান মহিলা, গরিব মুসলমান এবং পসমন্দা মুসলমানদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সংসদে পাশ হওয়া এই বিল স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করবে এবং মানুষের অধিকার সুরক্ষিত রাখবে।”
বুধবার গভীর রাতে লোকসভায় পাশ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাশ হয় ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫। ফলে বিলটির আইনে পরিণত হওয়া শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সই করলেই বদলে যাবে ৭০ বছরের পুরনো ওয়াকফ আইন।
সমস্ত বিতর্ক এবং সংশোধনী নিয়ে ভোটাভুটি শেষে বৃহস্পতিবার রাত ২টো ১৯ মিনিটে ‘ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫’ পাশ করানোর প্রস্তাব পেশ করেন সংসদীয় বিষয়ক এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। ধ্বনিভোটের ফলাফলে বিরোধী শিবির সন্তুষ্ট হয়নি। তারা বিভাজন (ডিভিশন) চায়। ভোটাভুটি শেষে রাত ২টো ৩৪ মিনিটে ফল ঘোষিত হয়। তাতে দেখা যায় বিলের পক্ষে পড়েছে ১২৮টি ভোট। আর বিপক্ষে পড়েছে ৯৫টি ভোট। ৩৩ ভোটের ব্যবধানে ওয়াকফ বিল রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যায়। বিতর্ক চলে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।
বুধবার লোকসভাতেও দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হয় ওয়াকফ বিল নিয়ে। শেষে গভীর রাতে সংসদের নিম্নকক্ষে পাশ হয় ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল। বিলের পক্ষে ২৮৮ এবং বিপক্ষে ২৩২ জন সাংসদ ভোট দেন।