প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কেবল অভিনেত্রীরাই নন, তিনিও ‘ডিপফেক ভিডিয়ো’ বা ভিডিয়ো কারচুপির শিকার হয়েছেন বলে আজ জানালেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ ধরনের ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগের এবং দেশকে বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ মোদী বলেন, প্রযুক্তির এ ধাঁচের অপব্যবহার রুখতে ভারত সরকারের তরফে গুগলের চ্যাটজিপিটি শাখাকে এ ধরনের ভুয়ো ভিডিয়ো চিহ্নিত করে তা নিয়ে সতর্কবার্তা দিতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি দক্ষিণী অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দনার একটি ভুয়ো ভিডিয়ো সামনে আসে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ‘ডিপ লার্নিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্য এক জনের চেহারায় রশ্মিকার মুখ ও কণ্ঠস্বর বসিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিতর্ক থিতু হওয়ার আগেই একে একে ‘ডিপফেক’ বা ভুয়ো ভিডিয়োর শিকার হন অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফ, কাজলেরা। অভিনেত্রীদের মতোই তিনিও সম্প্রতি ভুয়ো ভিডিয়োর শিকার হয়েছেন বলে আজ জানান মোদী। আজ দলের সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে দীপাবলি মিলন অনুষ্ঠানে মোদী বলেন, ‘‘সম্প্রতি একটি ভিডিয়োতে দেখি আমি গরবা গান গাইছি। কিন্তু ঘটনা হল আমি স্কুল ছাড়ার পরে এ ধরনের কোনও গান গাইনি। যাঁরা আমাকে পছন্দ করেন তাঁরা অনেকেই আবার ওই ভিডিয়ো আমায় পাঠিয়ে দেন।’’ তাঁর মতে, এ ধরনের বহু ভুয়ো ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, সংবাদমাধ্যমের উচিত এই বিষয়ে আমজনতার সচেনতা বাড়ানো। মোদী বলেন, ‘‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই যুগে আমাদের দায়িত্ব নিয়ে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে।’’ তাঁর আশঙ্কা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে যে ভুয়ো ভিডিয়ো তৈরি হচ্ছে তা আগামী দিনে বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিশেষত ভারতের মতো দেশে যেখানে সমাজের বড় অংশের কাছে এ ধরনের ভিডিয়োর সত্যি-মিথ্যে যাচাই করে দেখার প্রযুক্তি নেই, সেখানে এ ধরনের ভিডিয়ো সামনে আসা বেশ উদ্বেগের।
ইতিমধ্যেই এ ধরনের ভুয়ো ভিডিয়ো রুখতে তৎপর কেন্দ্র। চলতি মাসেই ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সাইবার আইন শাখা সব ক’টি সামাজিক মাধ্যমকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ভারতীয় আইন অনুযায়ী সমাজমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মে যে ভুয়ো তথ্য ও ভুয়ো ভিডিয়ো রয়েছে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। কেন্দ্র জানিয়েছে, এ ধরনের ‘ডিপফেক’ বা ভুয়ো ভিডিয়ো বানানো ও তা প্রচার করার অপরাধে কোনও ব্যক্তির এক লক্ষ টাকা জরিমানা ও তিন বছরের জেল, উভয়ই হতে পারে। কংগ্রেসের নেতা জয়রাম রমেশের বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এখন ডিপফেক ভিডিয়ো নিয়ে সতর্ক করছেন। আমরা ২০১৪ সাল থেকেই এই বিষয়ে সতর্ক করেছি।’’ ২০২০ সালে দিল্লিতে ভোটের সময়ে মনোজ তিওয়ারির ‘ডিপফেক’ প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি ভিডিয়ো হোয়াটসঅ্যাপে প্রচার করেছিল বিজেপি।