প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
দাক্ষিণাত্য সফরের শেষ দিনে হিন্দুত্ব এবং বিকাশ ও রাজনৈতিক প্রচারকে এক সূত্রে মিলিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রামমন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে উত্তর ভারতে তৈরি হওয়া ঝড়কে দক্ষিণেও পৌঁছে দেওয়ার জন্য মূল অনুষ্ঠানের চার দিন আগে কেরলে এসেছেন তিনি। দক্ষিণে শক্তি বাড়াতে উদগ্রীব মোদী কোচিতে বিজেপির বুথ-স্তরের নেতাদের নিয়ে সভা করলেন। দলের এই তৃণমূলস্তরের নেতাদের শেখাতে চাইলেন কেরল জয়ের কৌশল। বললেন, ‘‘অতীতে আপনাদের যা দক্ষতার নমুনা পেয়েছি, তার ভিত্তিতে আমি আশাবাদী, আপনারা কেরলে দলকে জয়ী করতে পারবেন।’’ রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি, কেরলের গুরুভায়ু মন্দিরে সকালেই পুজো দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কেরলের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে। উপস্থিত ছিলেন কেরলের অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা সুরেশ গোপীর মেয়ের বিয়েতে ওই মন্দির প্রাঙ্গণেই। পরে উদ্বোধন করেছেন ৪ হাজার কোটি টাকার তিনটি বড় প্রকল্প। জানিয়েছেন, এই প্রকল্পগুলি দেশের দক্ষিণের উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “গত ১০ বছরে বহু সংস্কার হয়েছে বন্দর, জাহাজ চলাচল এবং নদী পথের। সাগরমালা পরিযোজনার মাধ্যমে কোচির মতো বন্দর শহরের পরিকাঠামো, দক্ষতা এবং সংযোগ অনেকটাই বাড়িয়েছে কেন্দ্র। বাণিজ্য প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও সহজ হয়েছে।”
আজ গুরুভায়ুর মন্দিরে গোপীর কন্যা বিয়ের অনুষ্ঠানে যান প্রধানমন্ত্রী। পদ্মের কুঁড়ি নিয়ে যোগ দেন প্রার্থনা অনুষ্ঠান ‘থুলাভরাম’-এ। মন্দিরে আরও ১০টি দম্পতিকে আশীর্বাদ করেন তিনি। এক ঘণ্টা সেখানে থেকে ত্রিশূর জেলার ত্রিপ্রয়ায় শ্রী রামস্বামী মন্দিরে প্রার্থনা সেরে কোচি ফেরার পথে বিজেপি-র বুথকর্মীদের সঙ্গে সারেন রাজনৈতিক বৈঠক।
আজ যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করেছেন মোদী তার মধ্যে রয়েছে ‘কোচি শিপ ইয়ার্ড লিমিটেড’-এর অধীনে ৩১০মিটার লম্বা নিউ ড্রাই ডক, ইন্টারন্যাশনাল শিপ রিপেয়ার ফেসেলিটি এবং একটি এলপিজি গ্যাস আমদানির টার্মিনাল, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনে-এর। দেশের ‘আজাদি কা অমৃৎকালে’র সঙ্গে দক্ষিণ ভারতকে সংযুক্ত করতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “সমুদ্রপথে অমৃতকালের দর্শন ভারতের সামুদ্রিক শক্তিকে আরও জোরালো করার দিশা দেখাবে।”
বিজেপির ভাষ্যে রাজ্যের বুথ নেতারা হলেন ‘শক্তিকেন্দ্রের প্রমুখ’। মোদী তাঁদের সঙ্গে সভায় নির্দেশ দিয়েছেন, এলাকার সমস্ত মন্দির পরিষ্কার করতে। তিনি বলেন, “কেরল এমন একটি রাজ্য, যেখানে লোকেরা রামায়ণ মাস পালন করেন। যখন ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা চলবে, তখন আপনাদের উচিত এলাকার সমস্ত বাড়ি এবং মন্দিরে শ্রীরাম জ্যোতি জ্বালানো।”
ওই সভায় মোদীর পরামর্শ, ‘‘শক্তিকেন্দ্রের প্রমুখদের নিজেদের এলাকার মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। তাঁদের সমস্যাগুলো বুঝতে হবে। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সুবিধা তাঁদের বোঝাতে হবে। আপনার বুথে কোনও একটি পরিবারের দায়িত্ব নিন। প্রতিটি ভোট নিশ্চিত করতে হবে। নিশ্চিত করা উচিত, কেউ যেন ভোটার তালিকা থেকে বাদ না পড়েন। শক্তি কেন্দ্রের ইনচার্জরা নমো অ্যাপ ব্যবহার করুন। কেন্দ্রের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কেউ যেন বাদ না-পড়েন, তা নিশ্চিত করুন।”