ময়দানে বিজেপি। ফাইল চিত্র।
মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী, বল্লভভাই পটেল, সুভাষচন্দ্র বসুর পরে এবার ‘তিনি’ ভীমরাও অম্বেডকরের পথে। অন্তত এমনটাই দাবি করলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। ‘অম্বেডকর ও মোদী’ নামে একটি বইপ্রকাশের অনুষ্ঠানে আজ অনুরাগের দাবি, অম্বেডকরের দেখানো পথেই চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। অম্বেডকর যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাস্তবে যদি কেউ তা রূপায়ণ করে থাকেন— তাঁর নাম নরেন্দ্র মোদী। রাজনীতির অঙ্গনের অনেকেরই মতে, অম্বেডকরের সঙ্গে মোদীর যোগসূত্রকে তুলে ধরে দলিত ভোটকে কাছে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি।
প্রথমে পটেল, তারপর গান্ধীর প্রকৃত উত্তরসূরি হিসাবে নিজের দাবি প্রতিষ্ঠার পরে গত সপ্তাহে নেতাজির আদর্শ মেনে পথ চলার কথা জানিয়েছিলেন মোদী। এবার তাঁর সরকারের মন্ত্রী দাবি করলেন, অম্বেডকরের রাস্তাতে হেঁটে যদি কেউ সমাজের পিছিয়ে থাকা অংশের উন্নয়নের কথা ভেবে থাকেন, তিনি নরেন্দ্র মোদী। অনুরাগের কথায়, ‘‘অম্বেডকর শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ক্ষমতায়নে জোর দিয়েছিলেন। মোদীও ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে শিল্পোন্নয়ন ঘটিয়ে সমাজের পিছিয়ে থাকা শ্রেণির উন্নতির চেষ্টা চালাচ্ছেন।’’ অনুষ্ঠানে সদ্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও বলেন, ‘‘অম্বেডকরের সত্যিকারের অনুগামী যদি কেউ থাকেন, তিনি হলেন মোদী।’’
সামনেই গুজরাত, হিমাচলপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা ভোট। এগিয়ে আসছে লোকসভা নির্বাচনও। এই আবহে অম্বেডকরের ভাবনার সঙ্গে মোদীকে জুড়ে দেওয়ার যে কৌশল নিয়েছে বিজেপি, তাতে ভোট রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। দলিত ও প্রান্তিক শ্রেণির মানুষের উন্নয়নে বিজেপি তথা মোদী সরকার যে বদ্ধপরিকর— সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন সরকারের মন্ত্রীরা। যদিও বিরোধীদের দাবি, গত আট বছরে দেশে দলিত নিগ্রহের ঘটনা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে, বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশে দলিত নিগ্রহ নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ দলিতদের একটি বড় অংশ। সে কারণেই বিক্ষুব্ধ দলিত সমাজের মন পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। পাশাপাশি, দলিত নেত্রী মায়াবতীর দল বিএসপি কার্যত ছন্নছাড়া হয়ে পড়ায় তাদের ভোটকে বিজেপির পক্ষে নিয়ে আসার তাগিদও রয়েছে। সেই কারণেই অম্বেডকর ভজনা।
আগামিকাল মোদীর জন্মদিন। কাল থেকে ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তী পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সমাজের পিছিয়ে থাকা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে বিজেপি। বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, ওই সময়ে জনহিতকারী বিভিন্ন কাজ— যেমন, রক্তদান শিবির, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা, টিকাকরণ শিবির ছাড়াও প্রত্যেক নেতাকে একজন করে যক্ষা ও কুষ্ঠ রোগীর দায়িত্ব নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের কাজের জন্য পিছিয়ে থাকা এলাকাগুলিকে বেছে নিতে বলা হয়েছে দলের কর্মীদের।