মোবাইলটা কানে দিতেই জলদগম্ভীর কণ্ঠস্বর— ‘ম্যায় অমিতাভ বচ্চন বোল রহা হুঁ!’
তার পরেই মহানায়ক বলছেন, আপনি যে শৌচালয় ব্যবহার করছেন, তা পরিচ্ছন্ন তো? খাটা পায়খানা ব্যবহার করেন না তো? পাড়ার সকলের শৌচালয় পরিচ্ছন্ন?
সংক্ষিপ্ত একমুখি দক্ষ কথাবার্তা। আপাতত ল্যান্ডলাইন ও মোবাইলে ওই প্রচার চলছে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ-সহ হিন্দি বলয়ের কয়েকটি রজ্যে।
আরও পড়ুন: হনুমানও ‘দলিত’! ত্রেতা যুগের বার্থ সার্টিফিকেট কলিতে দিলেন যোগী
বিজেপি সূত্র বলছে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দল চাইছে প্রচারে অমিতাভকে বিশেষ ভাবে কাজে লাগাতে। অমিতাভ দীর্ঘ দিন ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ। তিনি গুজরাত সরকারের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। সম্প্রতি মোদী সরকারের স্বচ্ছতা প্রকল্পের প্রচার করছেন তিনি। বিজেপি সূত্রের খবর, মোদীর সঙ্গে অমিতাভের সম্প্রতি কথা হয়েছে। অমিতাভ জানিয়েছেন তিনি দলের হয়ে প্রচার না-করলেও মোদী সরকারের জন্য করবেন। কেন্দ্রের নানা প্রকল্প নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে, গ্রামে গ্রামে প্রচার চালাবেন অমিতাভ। এই প্রচারের অনেকটাই হবে ডিজিটাল অ্যাপ-এ— সোশ্যাল মিডিয়া, হোয়াটসঅ্যাপের সাহায্যে।
আরও পড়ুন: মিছিলেই মৃত্যু বাবার, ফের লং মার্চে দিল্লিতে ছেলে
আপাতত স্বচ্ছতা প্রকল্পের মোবাইল বার্তা হিন্দি বলয়ের গ্রামাঞ্চলে কতটা প্রভাব ফেলছে, সেটাই সমীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সেই রিপোর্ট ইতিবাচক হলে অমিতাভকে আরও ব্যবহার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।
মোদী সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘অমিতাভ কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন। মুলায়ম সিংহ যাদবের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বুদ্ধি খাটিয়ে কাজে লাগাতে হবে তাঁকে।’’ মোদী অমিতাভকে গুজরাত সরকারের প্রচার
করিয়েছেন। অমিতাভ সরকারের সরাসরি প্রচার করেননি। গুজরাতের গির অরণ্য বা কচ্ছের রনের কথা বলেছেন। তিনি রাজনীতির কথা বলেন না। শুধু তাই নয়, অমিতাভ মোদীকে বলেছেন— এই কাজের জন্য তিনি সরকারের কাছ থেকে একটি পয়সাও নেবেন না।
আবার মোদীর স্বচ্ছতা কর্মসূচির সমর্থনে অমিতাভই শুধু নন, রতন টাটা এবং অক্ষয় কুমারও এগিয়ে এসেছেন। তবে শুধু স্বচ্ছতা নয়, অমিতাভ পোলিয়ো দূরীকরণ এবং বাঘ সংরক্ষণের মতো কেন্দ্রীয়
কর্মসূচির জন্যও কাজ করছেন। এর আগে টুইট করে অমিতাভ জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তি মোদীর বিজ্ঞাপন ছবিতে অংশ নিচ্ছে না। এখনও নাকি অমিতাভের অবস্থান সেটাই। বিজেপি বা মোদীর কোনও রাজনৈতিক প্রচার নয়, তিনি সরকারি কর্মসূচির জন্য কাজ করবেন।
মোদীও তাঁকে সে ভাবেই কাজে লাগাতে চাইছেন। বিজেপি মনে করছে, এখন গ্রামের প্রত্যন্ত মানুষও মোবাইল ব্যবহার করেন। তাই অমিতাভ সরাসরি ফোনে কথা বললে সাধারণ দোকানদার, মাছ চাষি থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষের কাছেও ২০১৯-এর আগে সুকৌশলে পৌঁছে যাওয়া যাবে।