এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনে এসে কংগ্রেসকে আক্রমণ প্রধানমন্ত্রীর। ছবি— পিটিআই।
একে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা। তার দোসর হয়েছে সর্বব্যাপী দুর্নীতির অভিযোগ। টলোমলো কর্নাটকে বাজিমাত করতে কি শেষমেশ মোদী শরণেই বিজেপি? কর্নাটকে গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলে কান পাতলে এমন আলোচনা কানে আসবেই। এই পরিস্থিতিতে জেডিএসের শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত মাণ্ড্যতে স্বমহিমায় পাওয়া গেল প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন মোদী। ভোটমুখী কর্নাটকে এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন হয়ে দাঁড়াল পুরোদস্তুর রাজনৈতিক সভা।
রবিবার কর্নাটকে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করলেন ১৬ হাজার কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের। যার মধ্যে আছে বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এক্সপ্রেসওয়েও। ৮৪৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ১১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের সূচনার ফলে রাজধানী বেঙ্গালুরু থেকে মাইসুরু পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র ৭৫ মিনিট। যা আগে লাগত অন্তত তিন ঘণ্টা। এই প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়েই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন মোদী।
সম্প্রতি কংগ্রেস স্লোগান তুলেছে ‘মোদী তেরি কবর খোদেঙ্গে’ (মোদী তোমার কবর খুঁড়ব)। রবিবার সেই স্লোগান নিয়েই কংগ্রেসকে বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস মোদীর কবর খোঁড়ার স্বপ্নে মশগুল থাকুক। কিন্তু তারা জানে না, দেশের মা, বোনেদের যে ভালবাসা আমার সঙ্গে রয়েছে তা-ই আমার রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করে। ওরা (কংগ্রেস) মোদীর কবর খোঁড়ার স্বপ্ন দেখতে থাকুক, আমি বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এক্সপ্রেসওয়ে তৈরিতে মনযোগ দিই। গরিব মানুষের বেঁচে থাকা সহজ করি।’’ মোদীর কথা শুনে উল্লাসে ফেটে পড়ে জনতা।
এখানেই থামেননি মোদী। কংগ্রেসের সমালোচনা এবং নিজেদের কাজের বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘২০১৪-এর আগে কংগ্রেস সরকার গরিব মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে কোনও চেষ্টা বাদ রাখেনি। কংগ্রেস সরকার গরিবের টাকা লুট করেছিল।’’
কর্নাটকের মাণ্ড্য পুরনো মাইসুরুর মধ্যে পড়ে। এই এলাকায় মোট ৬১টি বিধানসভা আসন রয়েছে। যা জেডিএসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। কংগ্রেসেরও দাপট রয়েছে এই এলাকায়। ২০১৮ সালে বিজেপি কর্নাটকের উপকূল এলাকায় দুর্দান্ত ফল করেছিল। ভাল আসন জিতেছিল মুম্বই-কর্নাটক এলাকাতেও। কিন্তু পুরনো মাইসুরু এলাকায় পদ্মের ফলাফল মোটেই ভাল না। প্রকল্পের উদ্বোধনের মাধ্যমে সেই মাণ্ড্যতেই ভোটের বাজনা বাজিয়ে দিয়ে গেলেন মোদী। কিন্তু মোদীর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এ বারও কর্নাটকের ভোট বৈতরণী পেরোতে পারবে কি বিজেপি? প্রশ্ন এখন সেটাই।