Narendra Modi on Gujarat Riot

মিথ্যা কথা রটানো হয়েছিল, হিংসা আগেও ঘটেছে! গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই দাবি প্রধানমন্ত্রী মোদীর

গুজরাতে ২০০২ সালের দাঙ্গা নিয়ে যে সব কথা ছড়িয়েছে, তা বিরোধীদের মিথ্যা রটনা বলে দাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তাঁর বক্তব্য, ২০০২ সালের আগেও গুজরাতে ছোটখাটো বিষয়ে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ত।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ২২:৫৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে তাঁর বিষয়ে যে সব কথাবার্তা ছড়িয়েছিল, তা আসলে মিথ্যা রটানোর চেষ্টা হয়েছিল। গোধরা পরবর্তী দাঙ্গা প্রসঙ্গে এমনটাই দাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। মার্কিন পডকাস্টার ফ্রিডম্যানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদীর দাবি, তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষেরা চেয়েছিলেন, ওই মিথ্যা গল্প রটিয়ে তাঁর উপরে দোষ চাপাতে। কিন্তু আদালতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ২০০২ সালের দাঙ্গা নিয়ে এমন একটি ধারণা তৈরি করা হয়েছিল যেন সেটি গুজরাতের সবচেয়ে বড় দাঙ্গা। এটিও একটি মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা বলে দাবি মোদীর।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “যদি ২০০২ সালের আগের তথ্য পর্যালোচনা করা যায়, তা হলে দেখা যাবে গুজরাতে ঘন ঘন দাঙ্গা হয়েছিল। কোথাও না কোথাও কার্ফু জারি করা হয়েছিল।” ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা এমনকি, সাইকেলে ধাক্কার মতো ছোটখাটো ঘটনাতেও হিংসা ছড়িয়ে পড়ত বলে দাবি মোদীর। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে মোদী বলেন, “১৯৬৯ সালে গুজরাতে ছ’মাসেরও বেশি সময় ধরে দাঙ্গা চলেছিল। ওই সময়ে আমি রাজনীতির ধারেকাছেও ছিলাম না।”

বস্তুত, ২০০২-এর ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায় সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন ধরানোর অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় ট্রেনের এস-৬ কোচের অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়। এঁদের অধিকাংশ অযোধ্যা থেকে ফেরা করসেবক। সেই ঘটনার পরই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে গুজরাত জুড়ে। দাঙ্গার বলি হন হাজারেরও বেশি মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। তিনিও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। রবিবার প্রকাশিত পডকাস্টে মোদী জানান, তিনি গুজরাতের বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার মাত্র তিন দিনের মধ্যে গোধরায় ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডটি ঘটেছিল। ফ্রিডম্যানকে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারার ওই ঘটনা কল্পনাতীত। কান্দাহার বিমান অপহরণ, সংসদে হামলা এমনকি ৯/১১ (আমেরিকায় জঙ্গি হানা)-এর মতো ঘটনার পরে এত জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। আপনি ভাবতে পারছেন, পরিস্থিতি কতটা অস্থির ছিল!”

Advertisement

মোদীর দাবি, সেই সময়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষেরা চেয়েছিলেন তাঁর উপরেই অভিযোগ পড়ুক। তিনি জানান, আদালত গোটা বিষয়টি অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে প্রমাণিত হয়েছেন। ওই ঘটনায় যাঁরা প্রকৃত অর্থে দোষী ছিলেন, আদালতে তাঁদের বিচার হয়েছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গত ২২ বছরে গুজরাতে একটিও দাঙ্গা বাধেনি। মার্কিন পডকাস্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদী জানান, বর্তমানে গুজরাত সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।

বস্তুত, গোধরায় ট্রেনে আগুন এবং তার পরবর্তী দাঙ্গার পরে ঘটনার তদন্তে সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল। গুজরাত সরকারের তরফে গঠন করা হয় একাধিক কমিশনও। গোধরাকাণ্ডের তদন্তে গুজরাত সরকারের গঠিত নানাবতী-মেহতা কমিশন মত দিয়েছিল, ট্রেনে আগুন নিছক দুর্ঘটনা নয়, এর পিছনে ষড়যন্ত্র ছিল। ২০১১-র পয়লা মার্চ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গোধরাকাণ্ডে ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাদের মধ্যে ১১ জনের ফাঁসির সাজা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ২০ জনের। মুক্তি পান অভিযুক্ত ৬৩ জন। পরে ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন মামলা হয় উচ্চতর আদালতে। ২০১৭-র অক্টোবরে গুজরাত হাই কোর্ট ১১ জনের ফাঁসির সাজা রদ করে যাবজ্জীবন জেলের সাজা দেয়। ২০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement