এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
এক দিকে তিনি সাম্প্রতিক কালে বিজেপি-বিরোধী জোটের প্রথম উদ্যোক্তা। অন্য দিকে তাঁর বিরুদ্ধে সহযোদ্ধাদের বড় অংশের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা শাসক দলের সঙ্গে ভারসাম্যের রাজনীতি করছেন তিনি। তবে আজ মোদীর নিশানায় ছিলেন সেই এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার।
আজ অহমেদনগর জেলার শিরডি শহরে কৃষকদের সমাবেশে পওয়ারের নাম না করে মোদীর বক্রোক্তি, তিনি ‘ব্যক্তিগত ভাবে’ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে ‘সম্মান’ করেন। কিন্তু সেই মন্ত্রী কৃষকদের নাম করে ‘রাজনীতির খেলা খেলেছেন।’ ইউপিএ সরকারের কৃষিমন্ত্রী পওয়ারের উদ্দেশে মোদীর বক্তব্য, “আমরা সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কৃষকদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করে গিয়েছি। কিন্তু মহারাষ্ট্রের কেউ কেউ শুধুমাত্র কৃষকদের নামে রাজনীতির খেলা খেলে গিয়েছেন। মহারাষ্ট্রের এক জন প্রবীণ নেতা কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী ছিলেন বছরের পর বছর। আমি তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে সম্মান করি। কিন্তু তিনি কী করেছেন কৃষকদের জন্য?”
পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন আগামী মাসে। তার পরই বেজে যাবে চব্বিশের লোকসভার ঘণ্টা। উত্তরপ্রদেশ এবং পঞ্জাবের সাম্প্রতিক কৃষক আন্দোলনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের মধ্যে রাখছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এ বারের প্রচারে এক দিকে যেমন চন্দ্রযান, কোভিড টিকার সাফল্য অথবা রামমন্দির নির্মাণ সংক্রান্ত হিন্দুত্ববাদকে তুলে ধরা হবে, তেমনই বিজেপি নেতৃত্ব বিশেষ ভাবে কৃষক আবেগকে নিজেদের পক্ষে রাখতে যত্নবান হবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আজ পরিসংখ্যান দিয়ে মোদী বলেন, “তাঁর (পওয়ারের) সাত বছরের মন্ত্রিত্বকালীন পর্যায়ে তিনি চাষিদের কাছ থেকে শস্য কিনেছেন সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকার। আর আমাদের সরকার সাত বছরে কিনেছে সাড়ে তেরো লক্ষ কোটি টাকার শস্য। বছরের পর বছর কৃষকরা সরকারের কাছ থেকে পাওনা আদায় করতে পারত না সে সময়। অথচ আমাদের সরকার কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য
পৌঁছে দিচ্ছে।”
তাঁর দাবি, তিনি সরকার গড়ার আগে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে খাদ্যশস্য কিনতে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় হত। কিন্তু ২০১৪ সালের পর তা কেনা হয়েছে সোয়া এক লক্ষ কোটি টাকায়। এই টাকা কৃষকদের ব্যাঙ্কে জমা পড়ে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এই সভায় বক্তৃতার আগে প্রধানমন্ত্রী শিরডির সাঁইবাবা সমাধি মন্দির দর্শন করেন এবং পুজো করেন। সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা, রেল, সড়ক, তেল এবং গ্যাস ক্ষেত্র মিলিয়ে মোট সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার মাল্টি মোডাল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মোদী। সাঁইবাবা মন্দিরে মোদী উদ্বোধন করেন ‘দর্শন কিউ কমপ্লেক্স’ নামের একটি ভবন। ২০১৮ সালে তিনি শিলান্যাস করেছিলেন এই প্রকল্পটির। অন্তত ১০ হাজার তীর্থযাত্রী এই ভবনে বিশ্রাম নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। মহারাষ্ট্রের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন পর্ব সেরে প্রধানমন্ত্রী গোয়ার মারগাঁও-এ পৌঁছন ৩৭তম ন্যাশনাল গেমস-এর উদ্বোধন করতে।