‘ডাইনি’ ওয়েব সিরিজ়ের কৌশানি জানালেন বাস্তব অভিজ্ঞতা। ছবি: সংগৃহীত।
সাড়া ফেলেছে মিমি চক্রবর্তী অভিনীত ‘ডাইনি’। মিমির বোন অর্থাৎ ‘লতা’র চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন অভিনেত্রী কৌশানি মুখোপাধ্যায়। কাহিনি অনুযায়ী গ্রামবাসীদের কোপের মুখে পড়ে লতা। ডাইনি অপবাদ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় তাকে।
এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করে স্তম্ভিত কৌশানি নিজেও। তবে অভিনেত্রী বিশ্বাস করেন, সরাসরি পুড়িয়ে মারার মতো ঘটনা না ঘটলেও, এখনও মহিলাদের উপর নানা অত্যাচার হয়েই থাকে। অভিনেত্রীর নিজেরও এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। আনন্দবাজার ডট কমকে কৌশানি বলেন, “হয়তো ডাইনি প্রথার মতো পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে, তা দেখছি না। তবে চারপাশের মহিলা অথবা প্রান্তিক মানুষদের উপর যে অত্যাচার চলে, তার প্রতিফলন পেয়েছি এই সিরিজ়ে কাজ করতে গিয়ে।”
নানা রকমের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন, যেখানে অবদমনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু একটি ঘটনার জন্য নিজের অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। জানিয়েছেন কৌশানি। প্রেমের সম্পর্ক নয়, এক অচেনা পুরুষের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। কিন্তু সেই পুরুষ খুব কায়দা করে মানসিক ভাবে অবদমন করতে শুরু করেছিলেন। কৌশানি বলেছেন, “প্রায় তিন-চার মাস মানসিক ভাবে অবদমিত হয়েছিলাম। কথা বলার বা গলা তোলার ক্ষমতা পর্যন্ত ছিল না। শারীরিক ক্ষতিও হয়েছিল। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। এমন সহজ ভাবে কথা বলতে পারতাম না। যেন একটা চক্রব্যূহে জড়িয়ে পড়েছিলাম। এই ঘটনার পরে হেনস্থার শিকার হলেও তার প্রতিবাদ করতে পারতাম না।”
ক্রমশ বন্ধুদের সঙ্গে এই মানসিক যন্ত্রণার কথা ভাগ করে নিতে শুরু করেন কৌশানি। ধীরে ধীরে শক্তি ফিরে পেতে থাকেন। তবে এই ধরনের অভিজ্ঞতা লিঙ্গনির্বিশেষে মানুষের হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন অভিনেত্রী। কৌশানি বলেছেন, “আমি আসলে এই মানুষটিকে খুব ভাল ভেবেছিলাম। পরিচয় হওয়ার পরে বুঝতে পারিনি এই ব্যক্তির আসল উদ্দেশ্য কী। তবে প্রেম নয় এটা। ভাল পরিচিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই ব্যক্তি ক্রমশ আমাকে আমার ঘনিষ্ঠ পরিজনদের থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করত। এর পরে ফোনে বা মেসেজে আপত্তিকর কথা বলা শুরু করে। কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক ভাবে ক্ষতি করারও চেষ্টা করেছিল। যে দিন আমি প্রতিবাদ করি, সে দিনই শারীরিক ভাবেও ক্ষতি করেছিল।”
সাধারণত দীর্ঘ দিন বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার পরে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করায় বিশ্বাসী কৌশানি। কিন্তু এই ব্যক্তির সঙ্গে হঠাৎই পরিচয় হয়েছিল। সব কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানসিক ও শারীরিক ভাবে হেনস্থার শিকার হন তিনি। কৌশানির কথায়, “ঘটনাটি তিন মাসের হলেও, এর রেশ কাটিয়ে উঠতে আমার সময় লেগেছিল। প্রথমে মনে হয়েছিল, নিজেই সামলে উঠতে পারব। কিন্তু পরে বুঝলাম, বন্ধুদের সাহায্যের দরকার।” তবে এই ঘটনার পরে অনেকটা শক্তি সঞ্চার করেছেন কৌশানি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা নিজের সঙ্গে বা অন্যদের সঙ্গে ঘটলে দ্রুত প্রতিবাদ করার ক্ষমতা রাখেন বলে তিনি মনে করেন।
নাটকের মঞ্চ থেকে অভিনয়ের সফর শুরু করেছিলেন কৌশানি। ‘ডাইনি’ সিরিজ়ের আগে ‘কালরাত্রি’ সিরিজ়ে মায়ার চরিত্রেও নজর কেড়েছিলেন তিনি। নাটকের মঞ্চে অন্য ধরনের চরিত্রে সুযোগ পেতেন। তাই পর পর দুই সিরিজ়ে অন্য ধারার চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে খুশি অভিনেত্রী।