Narendra Modi

আপনারা দেখুন নিয়োগ দুর্নীতিতে কারা জড়িত, আমলাদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর

কোনও রাজনৈতিক দলের নাম মোদী এই বক্তৃতায় নেননি। কিন্তু তাঁর নিশানায় কংগ্রেস, তৃণমূল, আপ বা বিআরএস-এর মতো দলগুলি যে রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:১৪
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

চাকরিতে নিয়োগের প্রশ্নে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আমলাতন্ত্রকে নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার সকালে বিজ্ঞান ভবনে ষষ্ঠ সিভিল সার্ভিস দিবস উপলক্ষে দেওয়া বক্তৃতায় মোদীর বক্তব্য, করদাতাদের টাকা দেশের কাজে না লাগিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের স্বার্থে তা যথেচ্ছ ভাবে কাজে লাগাচ্ছে কি না, সে দিকে নজর রাখতে হবে। তাঁর মতে, “করদাতাদের টাকা দেশের কাজে লাগছে কি না তা বিবেচনা করা আমলাতন্ত্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এটা ঠিকই যে, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলের গুরুত্ব রয়েছে। এক-একটি দলের বিচারধারা এক-এক রকম হবে, তা সংবিধানস্বীকৃত। কিন্তু আমলাদের বিচার করতে হবে যে, মানুষের টাকা কোনও রাজনৈতিক দল নিজের সংগঠনের স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে, না কি দেশের উন্নয়নের জন্য।”

Advertisement

এখানেই না থেমে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করদাতাদের টাকায় দলগুলি কি নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করছে না কি নাগরিকদের জীবন সহজ করার জন্য তা কাজে লাগাচ্ছে? তারা কি জনতার টাকায় প্রচার বিজ্ঞাপন করছে? না কি মানুষকে বিভিন্ন যোজনা সম্পর্কে সচেতন করছে?” এর পরেই তিনি বলেন, “দেখতে হবে তারা নিজেদের কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠনে ঢুকিয়ে দিচ্ছে না কি নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখছে?”

কোনও রাজনৈতিক দলের নাম মোদী এই বক্তৃতায় নেননি। কিন্তু তাঁর নিশানায় কংগ্রেস, তৃণমূল, আপ বা বিআরএস-এর মতো দলগুলি যে রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। সূত্রের মতে, তিনটি বিষয়ে তিনি কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক দলকে এর আগে নিশানা করেছেন। প্রথমত, খয়রাতির রাজনীতি, দুই সরকারি অর্থে বিজ্ঞাপন এবং তিন নিয়োগ কাণ্ডে দুর্নীতি। পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে একের পর এক নেতা-কর্মীদের ডাকছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং একাধিক আধিকারিক, নেতা ওই অভিযোগে আপাতত জেলে। আপ-এর অন্যতম মুখ মণীশ সিসৌদিয়াও আবগারি দুর্নীতির অভিযোগে তিহাড় জেলে। পাশাপাশি আপ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে সরকারি টাকায় যথেচ্ছ বিজ্ঞাপন দেওয়ার। একই সঙ্গে খয়রাতির রাজনীতি নিয়ে কংগ্রেস, তৃণমূল বা বিআরএস-র মতো দলগুলিকে নিশানা করতে চেয়েছেন মোদী।

Advertisement

কংগ্রেসের বক্তব্য, নিয়োগে দুর্নীতির সবচেয়ে বড় অভিযোগ বছরের পর বছর সবচেয়ে বেশি উঠেছে মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “কে এই সব কথা বলছেন! মোদী সরকার সংসদে জানিয়েছে জন্মলগ্ন থেকে ২০২১ পর্যন্ত ‘বেটী বঁচাও, বেটী পড়াও’ যোজনার মোট খরচ ৬৮৩ কোটি টাকার মধ্যে ৪০১ কোটি টাকা খরচ হয়েছে শুধু প্রচার-বিজ্ঞাপনে। মোট খরচের যা ৬০ শতাংশ।” খয়রাতির রাজনীতির অভিযোগ নিয়ে এর আগেও মোদীর বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। দলের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী ‘কিসান সম্মান নিধি’ প্রকল্পে দেশের প্রায় ১০ কোটি কৃষককে তিন কিস্তিতে বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়ে থাকে। জাতীয় সহায়তা প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত ৯৬৫২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে দেশবাসীকে। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, কেন্দ্র যখন এই পরিমাণে খয়রাতি করছে, তখন রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির অভিযোগ তোলা ভিত্তিহীন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement