PM Narendra Modi

PM Narendra Modi: স্বাধীনতা-সপ্তাহে সব ঘরে তেরঙ্গার আবেদন মোদীর

স্বাধীনতার ৭৫ বছরকে জনসাধারণের উৎসবে পরিণত করতে দেশের বাকিদেরও ওই যোজনায় অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২২ ০৮:০৭
Share:

ফাইল চিত্র।

এ বছর, দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের দিন দেশের প্রত্যেক বাড়িতে জাতীয় পতাকা তোলার জন্য সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচির ঘোষণা করে আগামী ১৩-১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের ওই সপ্তাহে দেশবাসীকে নিজেদের বাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগানোর অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর এই কর্মসূচির সমালোচনা করতে গিয়ে কংগ্রেসের পাল্টা প্রশ্ন, যে আরএসএস স্বাধীনতার পরের ৫২ বছর ধরে জাতীয় পতাকাকেই মানেনি, সেই আরএসএস-এর কর্মী কী ভাবে ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা তোলার উপরে জোর দেন?

Advertisement

একাধিক রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে জাতীয়তাবাদ উস্কে দিতে এবং দ্রব্যমূল্য-বেকারত্ব-সহ নানা বিষয় থেকে দেশবাসীর দৃষ্টি ঘোরাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে এই ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মোদী সরকার। সম্প্রতি হায়দরাবাদে দলের কর্মসমিতির বৈঠকে এই পরিকল্পনা হাতে নেয় বিজেপি। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা প্রায় কুড়ি কোটি দেশবাসীর ঘরে জাতীয় পতাকা লাগাবেন। পাশাপাশি স্বাধীনতার ৭৫ বছরকে জনসাধারণের উৎসবে পরিণত করতে দেশের বাকিদেরও ওই যোজনায় অংশ নেওয়ার জন্য আজ একাধিক টুইটের মাধ্যমে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘তেরঙ্গা কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতে প্রতিটি ঘরে ১৩-১৫ অগস্ট জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান করছি। যা আমাদের জাতীয় পতাকার সঙ্গে একাত্মতাকে আরও মজবুত করবে।’’ কেন্দ্রীয় সরকারি দফতর ছাড়াও ওই যোজনায় অংশ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে প্রতিটি রাজ্য সরকারকে। এ ছাড়া দেশবাসীর কাছে বার্তায় শাসক শিবিরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রামের কভার ছবিতে জাতীয় পতাকার ছবি লাগানোর অনুরোধও করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি দফতর ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থার দফতর, রেস্তরাঁ, শপিং মল, টোল প্লাজা, থানাতেও ওই তিন দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আজকের দিনে ওই ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচির কেন ঘোষণা করা হল, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৪৭ সালে আজকের দিনেই গণ পরিষদের বৈঠকে গৃহীত হয়েছিল বর্তমান জাতীয় পতাকাটির চূড়ান্ত রূপটি। জাতীয় পতাকা সংক্রান্ত গণ পরিষদের বিতর্কের নথির ছবি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী লেখেন,‘‘আজ আমরা সেই সব ব্যক্তিদের সাহস ও প্রচেষ্টাকে স্মরণ করতে চাই, যাঁরা পরাধীন ভারতে বসে স্বাধীন ভারতের পতাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আমরা সেই সব ব্যক্তিদের স্বপ্ন পূরণ করতে এবং তাঁরা যে স্বপ্নের ভারতের ছবি দেখেছিলেন, তা গড়তে বদ্ধপরিকর।’’

Advertisement

আজ টুইটে মোদী জানান, স্বাধীন ভারতের প্রথম তিরঙ্গা উড়িয়েছিলেন জহওরলাল নেহরু। মোদীর বক্তব্যে নেহরুর নামে ইতিবাচক উল্লেখ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইস্তক মোদী যেখানে দেশেরযাবতীয় সমস্যার দায় নেহরুর ঘাড়ে ঠেলে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন, সেখানে নেহরুর নামে ইচিবাতক বার্তা দেওয়ায় জল্পনা বেড়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘যে সঙ্ঘ পরিবার স্বাধীনতার পরের ৫২ বছর ধরে নিজেদের সদর কার্যালয় নাগপুরে তেরঙ্গা তোলেনি, যারা তেরঙ্গাকে সর্বদা অপমান করে এসেছে, সেই সঙ্ঘ পরিবারের একদা প্রচারক নরেন্দ্র মোদী এখন তেরঙ্গার ইতিহাস নিয়ে বলছেন, ‘হর ঘর তিরঙ্গা’র কর্মসূচি হাতে নিচ্ছেন!’’ একই বিষয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করে তাদের উদ্দেশে টুইটারে তিনটি প্রশ্ন রেখেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। প্রথমত— স্বাধীনতার পরের ৫২ বছর (১৯৫০-২০০২) কেন সঙ্ঘ পরিবার তাদের সদর দফতরে তেরঙ্গা উত্তোলন করেনি? দ্বিতীয়ত— খাদির পরিবর্তে কেন চিনে তৈরি, পলিয়েস্টারের জাতীয় পতাকা এ দেশে আমদানি করার অনুমতি দেওয়া হল? এবং তৃতীয়ত, এর মাধ্যমে খাদি কাপড় দিয়ে যাঁরা জাতীয় পতাকা তৈরি করেন, তাঁদের জীবিকা কেন কেড়ে নেওয়া হল?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement