ফাইল চিত্র
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। সেই বিভেদ-তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ নিয়ে ভারত এবং ব্রিটেনের অবস্থানও। তবে শুক্রবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা গভীর করার লক্ষ্যে নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে বেশ কিছু চুক্তিপত্র সই হবে। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ব্রিটেনে এবং ভারতীয় উদ্যোগে ব্রিটিশ বিনিয়োগ বাড়ানো নিয়ে কথা হবে। ভারতে আসার আগেই বরিস জানিয়েছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং অবাধ বাণিজ্যের অধিকারের বিষয়টি অগ্রাধিকার পেতে চলেছে। মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি রূপায়ণের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নিয়েও দুই শীর্ষ নেতার কথা হবে।
তবে প্রধানমন্ত্রী তথা সাউথ ব্লক, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সে দেশে পাকিস্তানপন্থী খলিস্তানিদের দাপটের বিষয়টি তুলে প্রতিকার চাইবেন বলে সূত্রের খবর। একই সঙ্গে ব্রিটেনে পালিয়ে যাওয়া বিজয় মাল্য বা নীরব মোদীদের দ্রুত ভারতে প্রত্যর্পণ করার বিষয়টিও তোলা হবে। নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী আজ বলেছেন, “দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকে কী কথা হবে, তা আগাম বলতে পারি না। কিন্তু খলিস্তান এবং অর্থনৈতিক অপরাধ করে ব্রিটেনে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ফেরত আনার বিষয়টি বিভিন্ন মঞ্চে বার বার বলেছি। এ বিষয়ে আমাদের লুকোছাপার কিছু নেই।”
অপরাধের কোনও সম্যক নথি না থাকা সত্ত্বেও ব্রিটেন যে সে দেশে বসবাসকারী রাশিয়ার ধনী রাজনীতিকদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করছে, তা ভারতের নজরে রয়েছে। কিন্তু নীরব মোদীদের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের আইন দেখানো হচ্ছে। মোদী সরকারের আশা, বরিসের সফরের পর ব্রিটেনের কাছে থেকে এ ব্যাপারে বাড়তি সহযোগিতা পাওয়া যাবে।
কূটনৈতিক সূত্রে খবর, বরিসের চলতি সফরে পাকিস্তান নিয়ে ব্রিটেনের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে বলবেন মোদী। উঠে আসবে চিনের ভূমিকাও। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ব্রিটেনের দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক নিয়ে সাউথ ব্লক বিভিন্ন সময়ে হতাশা জানিয়েছে। ব্রিটেনকে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদ নিয়েও মুখর হতে বা ইসলামাবাদের কড়া সমালোচনা করতে দেখা যায়নি। আফগানিস্তানে পাকিস্তানের হক্কানি নেটওয়ার্কের সক্রিয়তা নিয়ে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদ্য প্রাক্তন চিফ অব স্টাফ নিক কার্টারের ভূমিকাও ভারত উষ্মার সঙ্গেই নজরে রেখেছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, বরিস জনসনের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়গুলিকে এড়িয়ে যাওয়ার কারণ নেই। দিল্লির অভিযোগ, ব্রিটেনের খলিস্তানি সংগঠনগুলি ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলনে অর্থ জোগাচ্ছে, সহায়তা করছে। এই নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও লাভ হয়নি।