কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ ব্যাপারে আলাদা আলাদা বিবৃতিও দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত।
জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকেই কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে কড়া কথা শোনালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কানাডায় খলিস্তানপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছেন, ভারত বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আর যে ভাবে কানাডার আশ্রয়ে থেকে এই ভারত বিরোধীরা দিনের পর দিন সংগঠিত অপরাধ করে চলেছে, তাতে কানাডার কাছেও বিষয়টি উদ্বেগের হওয়া উচিত। কারণ, তাঁর মতে এই ধরনের ঘটনা দু’দেশের কূটনৈতিক সুসম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। আর তিনি বিশ্বাস করেন, পারষ্পরিক সম্মানেই দু’দেশের মজবুত সম্পর্কের ভিত।
রবিবার ছিল ভারতে আয়োজিত জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় তথা শেষদিন। সম্মেলনের ফাঁকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রী মোদীর। সেখানেই কানাডায় খলিস্তানপন্থীদের ভারত বিরোধী বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, হামলা মিছিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মোদী। বৈঠকে দু’দেশের রাষ্ট্রনেতার মধ্যে হওয়া আলোচনার কথা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। কানাডায় নিরাপদে বেড়ে ওঠা খলিস্তানপন্থীদের নিয়ে মোদী সরকারের উদ্বেগের কথা জানা গিয়েছে তা থেকেই।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘কানাডায় চরমপন্থীরা বিচ্ছিন্নতাবাদকে উসকানি দিচ্ছে। সেই সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিকদের উপর হামলাও চালাচ্ছে। কানাডায় ভারতের দূতাবাসের ক্ষতি সাধন করছেন এই চরমপন্থীরা। শুধু তা-ই নয়, সেখানকার প্রবাসী ভারতীয় সম্প্রদায় এবং তাঁদের উপাসনা স্থলেও হামলা চালাচ্ছে।’’ মোদী বলেছেন, ‘‘এই ভারত বিরোধী চরমপন্থীদের সঙ্গে গোপন আঁতাত রয়েছে মাদক সিন্ডিকেট এবং মানব পাচারকারীদেরও। এঁদের সঙ্গে মিলে সংগঠিত অপরাধ করে চলেছে এরা। যা কানাডা প্রশাসনেরও উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত। এই ধরনের ঘটনার মোকাবিলায় দু’দেশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মোদী। কারণ, দু’দেশের সুসম্পর্ক পারষ্পরিক সম্মানের ভিত্তিতেই গড়ে উঠতে পারে।
গত এক বছর ধরেই কানাডায় একের পর এক খলিস্তানি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে খলিস্তানিদের বিক্ষোভ থেকে শুরু করে, ভারতীয় সাংবাদিকের উপর হামলা, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার ঘটনাকে উদযাপন করতে মিছিলও বেরিয়েছে কানাডায়। এ ব্যাপারে মোদীর বক্তব্যের জবাবে ট্রুডো বলেছেন, ‘‘কানাডা বরাবরই ভারতের সঙ্গে সু সম্পর্কের জন্য আলোচনা করে এসেছে। কানাডা তাদের মাটিতে কোনওরকম হিংসার ঘটনাকে বরদাস্ত করবে না।’’ তবে একই সঙ্গে ট্রুডো জানিয়েছেন, এই ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে কানাডাকে বিচার করা উচিত নয়।