(বাঁ দিকে) মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের সঙ্গে রবিবার বিকেলে দিল্লিতে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে দুই জনজাতির সংঘর্ষে বিধ্বস্ত মণিপুর। তার পর এই প্রথম মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি হলেন প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে একটা বড় সময় নীরবই থেকেছেন মোদী। তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এই আবহে রবিবার বীরেনের সঙ্গে বৈঠক হল মোদীর। সূত্রের খবর, ওই রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট কথা হয় তাঁদের মধ্যে। বৈঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। যদিও প্রধানমন্ত্রীর দফতর বা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর তরফে এই বিষয়ে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
রবিবার বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মধ্য দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে হয়েছে দু’দিনের ওই বৈঠক। মূল বৈঠকের পাশাপাশি, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা ভাবে কথাও বলেন মোদী। কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপদস্থ এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ১৫ থেকে ২০ মিনিট কথা হয়েছে দু’জনের। উপস্থিত ছিলেন অমিত এবং রাজনাথ। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে কী কথা হয়েছে, তা আগামী দিনে প্রকাশ করা হতে পারে।’’
২০২৩ সালের মে মাস থেকে কুকি এবং মেইতেই জনজাতির সংঘর্ষে উত্তপ্ত মণিপুর। মারা গিয়েছেন অন্তত ২২৫ জন। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার। এখন সেই হিংসা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। যদিও মাঝেমধ্যেই মণিপুরে বিক্ষিপ্ত ভাবে সংঘর্ষ বা প্রাণহানির অভিযোগ উঠেছে। উঠেছে নারী নিগ্রহের অভিযোগও। ১৮ মাস ধরে এই ঘটনা চললেও এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটা বড় সময় কার্যত নীরবই থেকেছেন। গত বছর জুলাই মাসে মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় তিনি ব্যথিত এবং ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন মোদী। তবে কখনও মণিপুরের পরিস্থিতি দেখতে সেখানে যাননি। তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্কে মোদী ২ ঘণ্টা ১৪ মিনিট ধরে জবাবি বক্তৃতা করলেও মণিপুরের হিংসা নিয়ে কোনও কথা বলেননি। তা নিয়েও সংসদে স্লোগান দিয়েছেন বিরোধীরা। হিংসা শুরুর পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের সঙ্গে রবিবারের আগে পর্যন্ত তাঁর মুখোমুখি বৈঠকও হয়নি। এই আবহে রবিবার দু’জনের বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, দিল্লি গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, কয়েক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বীরেন। তবে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের কোনও ছবি তাঁর তরফে সমাজমাধ্যমে বা সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশ করা হয়নি।