ছবি: রয়টার্স।
বিরল রোগ ‘এপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া’য় দীর্ঘদিন ভুগছে তাঁর কিশোরী মেয়ে। সেই চিকিৎসার বিপুল খরচ বহন করতে করতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল আগরার বাসিন্দা ললিতা নামে বছর ষোলোর ওই কিশোরীর বাবা, পেশায় মজুর সুমের সিংহের। ইতিমধ্যেই সাত লক্ষ টাকা ব্যয় করে ফেলেছেন সুমের। আর সঙ্গতি নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে মেয়ের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের আর্জি জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন সুমের সিংহ। আর্জি ছিল, সরকার যদি সাহায্য না-করতে পারে, তা হলে যেন ইচ্ছামৃত্যুর অধিকার দেওয়া হয় তাঁকে। সেই আর্জিতে সাড়া দিয়ে নিজের ত্রাণ তহবিল থেকে ললিতার চিকিৎসার জন্য ৩০ লক্ষ টাকা অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ললিতা যে রোগে আক্রান্ত, তাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্তকণিকা তৈরি হয় না শরীরে। এর জন্য প্রতি সপ্তাহে রক্ত নিতে হয় তাকে। চিকিৎসক বলেছিলেন, অস্থিমজ্জা বদলানোরও প্রয়োজন হবে তার। সুমেরের অন্য সন্তানদের সঙ্গে ওই কিশোরীর অস্থিমজ্জা মিলছে কি না, তা নির্ধারণ করতেই হাজার হাজার টাকা বেরিয়ে যায় সুমেরের। এত দিন চিকিৎসা চালাতে গিয়ে জমি-বাড়ি দুই-ই বিকিয়ে গিয়েছে সুমেরের। তাঁর দুর্দশায় সরকারের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে টুইট করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও।
সুমের জানান, এর আগে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে কিছু টাকা পেয়েছিলেন তিনি। তবে তা যথেষ্ট ছিল না। সুমেরের কথায়, ‘‘মেয়েকে প্রথমে দিল্লি নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও ডাক্তার ওকে দেখলেন না। এর পরে জয়পুরে যাই। ডাক্তারবাবু আমাকে জানান, মেয়ের অস্থিমজ্জা বদলাতে হবে। কম করে ১০ দশ লক্ষ টাকা লাগবে এর জন্য। এর পরে আমি এটা-র সাংসদ রাজবীর সিংহের দ্বারস্থ হই। তিনি একটি চিঠি লিখে আমাকে আশ্বাস দেন, চিঠিটি দিল্লিতে জমা দিলেই প্রয়োজনীয় টাকা পেয়ে যাব বলে। আমি তা করি। ১৫ দিনের মাথাতেও কোনও উত্তর না-আসায় চিঠিটি নিয়ে আমি ফের জয়পুরে যাই। ডাক্তারবাবু আমাকে জানান, আমাকে আরও টাকা জোগাড় করতে হবে।’’
এখন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কোনও রাস্তা দেখছিলেন না সুমের। টাকা না পেলে মৃত্যুই একমাত্র পথ বলে দাবি করে সুমের বলেছিলেন, ‘‘আমি আর চোখের সামনে মেয়েটাকে এ ভাবে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখতে পারছি না। সাহায্য না-করতে পারলে মরতে দিন আমায়।’’ তার পরেই মোদীর ওই পদক্ষেপ।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।