প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশের ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে হবে ওই বৈঠক। দেশে ক্রমশ বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ এবং করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।
দিনক’য়েক আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে বলতে শোনা গিয়েছিল, দেশ এখন কোভিড অতিমারি যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে। মন্ত্রীর সেই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ভারতীয় চিকিৎসা সংগঠন আইএমএ। তারা বলেছিল, দেশবাসীর মনে ভুয়ো নিরাপত্তার বীজ না বোনাই ভাল। এব্যাপারে সরকার এবং মন্ত্রীদের সতর্ক থাকার কথাও বলে তারা। সেই বার্তার কিছুদিনের মধ্যেই দেশে বাড়তে থাকা করেনা সংক্রমণ নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এই জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকের কারণ গত কয়েক দিনের দৈনিক করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যান। বছরের গোড়ার দিকে যেখানে গড়ে প্রতি দিন ১০ হাজার করে সংক্রমণ হচ্ছিল, সেখানে গত কয়েক দিনে হঠাই তা দ্বিগুণ হয়ে ৩ গুণের দিকে এগতে শুরু করেছে।
সোমবার দেশের দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ২৬ হাজার ২৯১-এ। যা গত ৮৫ দিনে সর্বোচ্চ। এরই মধ্যে দৈনিক মৃত্যুসংখ্যাও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮ জনের করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে। অবনতি হয়েছে করোনা থেকে সেরে ওঠার হারেও। সরকারি হিসেব অনুযায়ী প্রতি ১০০ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন ৯৬-৯৭ জন। সুস্থ হয়ে ওঠার এই হার মাঝে আরও বেশি ছিল। এ ছাড়া দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ ১৯ হাজার ২৬২। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশে টিকাকরণ চালু হওয়ার পরও এই হঠাৎ বেড়ে যাওয়া করোনা সংক্রমণের হার তাই চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রকে।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী মূলত ৫টি রাজ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের সংখ্যাই এই সংক্রমণ বা়ড়ার কারণ। তালিকায় প্রথমেই রয়েছে মহারাষ্ট্র। তার পর যথাক্রমে পঞ্জাব, কর্নাটক, গুজরাত এবং তামিলনাড়ু। দেশের মোট সংক্রমণের ৭৮.৪১ শতাংশ এই ৫ রাজ্যেই। যার মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ সংখ্যা দেশের মোট সংক্রমণের ৬৩ শতাংশ। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আটকাতে মরিয়া মহারাষ্ট্র ইতিমধ্যেই বেশ কিছু শহরে লকডাউন ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র জুড়েই লকডাউন ঘোষণা করার ‘ভয়’ও দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।
দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের বাড়তে থাকা সংখ্যার দিকে নজর রেখে মোদীর ভার্চুয়াল বৈঠক নিয়ে তাই ধন্দে বিশেষজ্ঞরা। এই ৫ রাজ্য ছাড়াও মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি এবং হরিয়ানায় নতুন করে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। সে ক্ষেত্রে এই রাজ্যগুলি নিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কোনও বিশেষ নির্দেশ জারি করবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে সোমবার থেকেই।