(বাঁ দিকে) সংসদ হানার মাস্টারমাইন্ড ললিত ঝা। লোকসভা কক্ষে হানার সেই মুহূর্ত (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
বুধবার সংসদে হানার ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। ললিত ঝা, সাগর শর্মাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের পরিকল্পনার বিষয়ে খুঁটিয়ে তদন্ত করছেন দিল্লি পুলিশের আধিকারিকেরা। পুলিশ জানতে পেরেছে, একটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছিলেন সংসদ হানার চক্রীরা। সেখানেই গোটা বিষয়টির নীল নকশা আঁকা হয়েছিল। কে কী করবেন, কখন, কী ভাবে কাজ করবেন, ওই গ্রুপেই ঠিক হয়েছিল। সহযোগীদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন খোদ ললিত।
ললিতদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ভগৎ সিংহ ফ্যান ক্লাব’। গ্রুপটি খুলেছিলেন সাগর। তিনিই বাকিদের ওই গ্রুপে যুক্ত করেন। তার আগে ইনস্টাগ্রামে যোগাযোগ হয়েছিল এই চক্রান্তকারীদের। ইনস্টাগ্রামে ‘দেশভক্ত৮৮’ নামের একটি হ্যান্ডেল খোলা হয়েছিল। যাঁরা সেখানে আগ্রহ প্রকাশ করতেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মূল গ্রুপে যুক্ত করা হত।
পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার দুপুরে যে ভাবে সাগর এবং মনোরঞ্জন লোকসভার গ্যালারি থেকে কক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এবং তার পরে যে ভাবে সভাকক্ষে রংবোমা দিয়ে হলুদ ধোঁয়া ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের পরিকল্পনা আসলে তার চেয়ে কিছুটা অন্য রকম ছিল।
কী করতে চেয়েছিলেন মনোরঞ্জনরা? কী করতে পারেননি?
লোকসভায় অন্তত পাঁচ জনকে প্রবেশ করানোর পরিকল্পনা ছিল ললিতের। তাতে প্রতিবাদ আরও জোরদার হত। কিন্তু সকলের জন্য অনুমতিপত্র মেলেনি। ললিত নিজেই লোকসভা কক্ষে ঢুকতে চেয়েছিলেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, অন্তত দু’বছর ধরে এই সংসদ হানার পরিকল্পনা করছিলেন ললিত এবং তাঁর দলবল। ধীরে ধীরে সংসদের নিরাপত্তা বলয় টপকে ভিতরে ঢোকার ছক কষেছিলেন। লোকসভায় কিছু প্যামফ্লেট বা প্রচারপত্র নিয়ে ঢুকেছিলেন সাগর এবং মনোরঞ্জন। বাকিদের কাছেও ওই কাগজ ছিল। সেখানে লেখা ছিল, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিখোঁজ। তাঁকে খুঁজে দেওয়া হলে পুরস্কার বাবদ সুইস ব্যাঙ্ক থেকে অর্থ মিলবে।’’ এই প্যামফ্লেট সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতেই তুলে দিতে চেয়েছিলেন হানাদারেরা। তেমনই পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সে দিন লোকসভায় ছিলেন না। তাই সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।